rss

বুধবার, ২ সেপ্টেম্বর, ২০০৯

যখন তোমার শহরে যাই

যে শহরে জন্মেছি- প্রিয় মাইজদীতে, সে শহর ছাড়া
আর কোন শহর আপন মনে হয় না; আপন হয়ে ওঠে না।
তুমি যে শহরে আছো, সে আমার জন্ম শহর নয়।
স্বভাবতই আমার আপন শহর নয়,
প্রিয় নয়, নয় পুরোনো ভৃত্যের মত বিশ্বস্ত।
তোমার সুবাদে ওই শহরের প্রতিটি রাস্তা আমার হয়ে ওঠার প্রবল
সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও, আমার হয়ে ওঠে না।
তোমার শহর তার সমস্ত ঐশ্বর্যের ডালি মেলে ধরেও
আমাকে সুখী করতে পারে না,
অসুস্থ্য বোধ করি কৃত্রিম চাকচিক্যের শহরে।

তোমার শহর আমার শহর নয়,
তবু তা আমার হয়ে উঠেছিলো কয়েকটি মাস।
যেমন হাসপাতালের নার্সগুলো আপন হয়ে ওঠে কিছুকাল।
তারপর রোগ সারলে পরে ভুলে যাওয়া হয় ক'দিন পরেই।

তোমার শহরের প্রতিটি ধূলিকনা আমাকে উত্তপ্ত লেজারবীমের মত আঘাত করে,
আমাকে অসুস্থ্য করে। তারপরও আমি যাই, কখনো যেতে হয় দায়িত্বের টানে।
তখন ওই শহরের প্রতিটি রিক্সা খেয়াল করি,
প্রতিটি সিএনজি, প্রতিটি বাসের জানালার পাশের সীট।
প্রতিটি রাস্তার পাশের আকাশ ছোঁয়া অ্যাপার্টমেন্টের জানালার পর্দা গলে উঁকি দেয় তোমার মুখ-
তোমার মুখের আদলের মত ছায়া ক্রমাগত বিভ্রমে নিমজ্জিত করে আমায় ।

তোমার শহরের সকল তরুণী সেকেন্ডের ভগ্নাংশ সময়
আমার হৃদস্পন্দন বন্ধ করে দেয়,
সবার মাঝে যেন তোমার ছায়া দেখে চমকে উঠি;
পরক্ষণেই ভুল বুঝতে পেরে দৃষ্টি ফিরিয়ে নিই।

তোমার শহরে গেলে আকাশছোঁয়া দালানের শোভা দেখি না,
শপিং মল খুঁজি না, লোভনীয় অ্যাপার্টমেন্টের বিজ্ঞাপন সন্ধান করি না।
তোমার শহরে আমি শেয়ার কেনাবেচা করতে যাই না,
উচ্চ বেতনের চাকরির ইন্টারভ্যু ও দিতে যাই না।

বিশ্বাস করো, জাগতিক কাজের ছুতোয়
ওই নির্মম শহরে কেবল তোমাকেই খুঁজতে যাই
আর কিছু নয়...


১৬ সেপ্টেম্বর, ২০০৮

ফেইসবুকে যোগ করুন