rss

মঙ্গলবার, ১৯ অক্টোবর, ২০১০

দারিদ্র পীড়িত এলাকায় স্কুল ফিডিং কর্মসূচী শুরু হচ্ছে :)

memorandum
কিছুক্ষণ আগে দৈনিক যায় যায় দিনে একটা খবর দেখে মনটা ব্যাপক খুশিতে ভরে উঠলো। সরকার দেশের দারিদ্র্যপীড়িত এলাকার ৮৬টি উপজেলায় ১হাজার ১৪২কোটি টাকা ব্যয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্কুল ফিডিং কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছে। আজ একনেক সভায় অনুমোদন পেলে ২০১৪ সালের জুন পর্যন্ত এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
ভালো লাগার একটা বড় কারণ হলো ব্যক্তিগতভাবে আমার সংস্থা এবং আমারও এতে অবদান আছে। আমরাই প্রথম এই দাবিটি তুলি এবং দাবি পূরণে পরিকল্পিত অ্যাডভোকেসি চালিয়ে যাই কয়েক বছর ধরে।
২০০৩ সালে কমনওয়েল্থ এডুকেশন ফান্ড (সিইএফ) এর সহযোগিতায় একশনএইড ও দেশের ৬টি অঞ্চলে স্থানীয় ৬টি সংগঠন (এনআরডিএস, ওয়েভ ফাইন্ডেশন, উত্তরণ, জাবারাং, এফআইভিডিপি, কোস্ট) আমরা একটি গবেষণা ও অ্যাডভোকেসী কার্যক্রম শুরু করি। আমাদের উদ্দেশ্য ছিলো প্রাথমিক শিক্ষার মান কমে যাওয়ার কারণগুলো চিহ্নিত করা এবং স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে অ্যাডভোকেসি
করা মান উন্নয়নে। ৬টি সংস্থা আলাদা আলাদাভাবে গবেষণা পরিচালনা করি। আমরা মূলত ভৌগলিকভাবে পিছিয়া পড়া অঞ্চলগুলোই বেছে নিই। নোয়াখালীর উপকূলীয় অঞ্চলে প্রাথমিক শিক্ষার মান কমে যাওয়ার ক্ষেত্রে একটা কারণ হিসেবে আসে ক্ষুধা ও দারিদ্র। শিশুরা এমনও বলে যে, "হেডে বোক লাইগলে আঁর স্কুল বালা লাগে না"। আসলেই তাই। দুপুরের পর পরই প্রাথমিক বিদ্যায়লগুলো প্রায় ফাঁকা হতে থাকে। কারণ অধিকাংশ শিশুই তেমন কিছু না খেয়েই স্কুলে আসতো। আমাদের গবেষণাটি আমরা "নোয়াখালীর প্রাথমিক শিক্ষা: স্বপ্ন ও বাস্তবতা" প্রকাশ করি। এবং প্রধান প্রধান অ্যাডভোকেসি ইস্যু হিসেবে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দুপুরের খাবার দেয়ার ইস্যুটি নিয়ে স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে ব্যাপক অ্যাডভোকেসি কার্যক্রম চালাই। স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে ব্যাপক জনমতও তৈরি হয়। নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে ইস্যুটি তুলতে আমরা সক্ষম হই।
ড. হোসেইন জিল্লুর রহমান এবং তাঁর সংগঠন পিপিআরসি আমাদের নেটওয়ার্কে সহযোগী সংগঠন হিসেবে ছিলেন। এবং দুপুরের খাবার বিষয়টি সহ অন্যান্য ইস্যুতেও অ্যাডভোকেসি কার্যক্রমে সহায়ক ভূমিকায় ছিলেন। সরকারের দারিদ্র্য বিমোচন কৌশলপত্র (পিআরএসপি) প্রণয়নে ড. হোসেইন জিল্লুর রহমান অন্যত ম একজন সদস্য ছিলেন। তাঁকে আমরা এর গুরুত্ব বোঝাতে সক্ষম হই। এবং পিআরএসপিতে বিদ্যালয়ে দুপুরের খাবার দেবার প্রস্তাব করা হয়। এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি ছিলো দুপুরের খাবারের দাবি বিষয়ক অ্যাডভোকেসি ইস্যুতে। সরকারের গুরুত্বপূর্ণ দলিলে অন্তর্ভূক্ত হওয়ায় আমাদের অ্যাডভোকেসির প্রচারে দারুণ কাজে দেয়। পরবর্তীতে তত্বাবধায়ক সরকার সময়ে উপদেষ্টা হন ড. হোসেইন জিল্লুর রহমান। এই ইস্যুটিও তাই সরকারের উচ্চ পর্যায়ে আলোচিত ইস্যুতে পরিণত হয়।
liflet
যেহেতু এর সাথে অনেক খরচের বিষয় জড়িত, তাই সরকার বাস্তবায়নে অনেক গড়িমসি করছিলো বলা যায়। আজকের একনেকে বৈঠকে পাস হলে এটা একটা যুগান্তকারী ঘটনা হবে নি:সন্দেহে। দেশের দারিদ্র্যপীড়িত এলাকায় কর্মসূচীটি বাস্তবায়িত হলে শিক্ষার মান বাড়ার পাশাপাশি শিশুদের পুষ্টির চাহিদাও কিছুটা পুরণ হবে। কর্মসূচির সাফল্য কামনা করছি। এবং এর সাথে সংশ্লিষ্ট দূর্ণীতিমুক্ত থেকে শিশুদের জন্য কাজ করবেন এই দাবি রাখছি।

ফেইসবুকে যোগ করুন