rss

বুধবার, ২ সেপ্টেম্বর, ২০০৯

শততম দুঃখ গাঁথা

আমার মৃত্যুর পর সবকিছুই স্বাভাবিক থাকবে।
কলেজ পড়ুয়া তরুণীরা বরাবরের মতই মুখরিত
আনন্দে প্রধান সড়ক দিয়ে হেঁটে যাবে,
বাতাসে তাদের বেণী দুলবে নিয়মিত ছন্দে।
মুঠোফোনে, এসএমএসে, ইমেইলে বিনিময় হবে হৃদয়ের মৌলিক ভাষা।
আমার মৃত্যুর পর শহরের প্রতিটি রাস্তায়
ট্রাফিক সিগনালগুলো নিয়মিত বিরতিতে জ্বলবে নিভবে
যান্ত্রিক সময় নির্ধারক একমুহুর্তও এদিক ওদিক করবে না।
আমার মৃত্যুর পর সিনেমাহলগুলোতে উপচে পড়া ভীড়ের কমতি হবে না
বক্স অফিসে নতুন নতুন হিট ছবি নতুন আয়োজনে আসতেই থাকবে;
সন্ধ্যার পর জেগে উঠবে মার্কেট, পার্ক, নিষিদ্ধ আনন্দের ঘর।
আমার মৃত্যুর পর শহরের প্রতিটি অলিগলিতে হবে স্বাভাবিক কলরব,
লেকের পাড়ের ঝুলন্ত রেস্তোরায় হাসবে সদ্য প্রেমে পড়া তরুণ তরুণীরা,
কোথাও সুনসান নিরবতা নামবে না, যেমন নেমেছিলো এক কারফিউর রাত্রিতে।
আমার মৃত্যুর পর আন্তর্জালের জগতে আলোড়ন উঠবে না,
সার্চের ঘরে কৌতুহলী কেউ লিখবে না নাম, জানতে চাইবে না
ঐ মায়ার জগতে আমার কোন অনুভূতি ছড়ানো আছে কি না।

আমার মৃত্যুর পর স্বজনরা কাঁদবে, ওদের কান্নাটাই স্বাভাবিক
— ওটা অস্বাভাবিক নয়, ভীষণ রকম প্রত্যাশিত।
আমার মৃত্যুর পর সবকিছুই স্বাভাবিক থাকবে
কেবল অস্বাভাবিক হবে এক জোড়া জীবিত চোখ
একদিন যে চোখে উপেক্ষার বাণী ছিলো, ছেড়ে যাবার
তাড়না ছিলো, সেই জোড়া চোখ ম্লান হবে মুহুর্তের অপরাধবোধে…



মাইজদী, নোয়াখালী
২৬ সেপ্টেম্বর, ২০০৮

ফেইসবুকে যোগ করুন