আমার এত প্রতিভা! আগে বুঝি নাই!
সোমবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০০৯
ইদানিং জীবনযাপন…
আমার এত প্রতিভা! আগে বুঝি নাই!
শুক্রবার, ২৭ নভেম্বর, ২০০৯
এ কবিতাঞ্জাল টু মুক্লা , অন হিজ বার্থ ডে / হোসেইন
এ কবিতাঞ্জাল টু মুক্লা , অন হিজ বার্থ ডে
লিখেছেন : হোসেইন ২৭ নভেম্বর (শুক্রবার), ২০০৯ ১২:২০ অপরাহ্ন
তোমাদের এই সব রঙিলা মেলায়
কেউ একজন এসেছিল মফস্বল থেকে,
তখনও সে শিখেনি মুখোশ কিভাবে আটকাতে হয় মুখের ওপর,
কিভাবে চোখে চোখ রেখে অবলীলায় মিথ্যে বলতে হয়,
কিভাবে একহাতে হাত ধরে রেখে,
অন্য হাত দিয়ে সন্তর্পনে তুলে নিতে হয় ঘাতক ছুরি।
সোমবার, ২৩ নভেম্বর, ২০০৯
ব্লগস্পটে অ্যানিমেটেড সাম্প্রতিক পোস্ট সাইডবার তৈরি করবেন যেভাবে
সোমবার, ১৬ নভেম্বর, ২০০৯
নতুন রুপে আমার ব্লগস্পট
মঙ্গলবার, ৩ নভেম্বর, ২০০৯
এবার তবে ঘুমাতে যাই
রাত পেরুলেই আর এক ভোর
ভোর কাটলেই অফিসঘর
বিকেল বেলায় এদিক ওদিক
ঘুরে ফিরে কাটিয়ে দিলেই আর এক সাঁঝ
তামাক সঙ্গে ফুরাবে মিনিট দুইশ' পাঁচ।
সোমবার, ২ নভেম্বর, ২০০৯
থ্যালাসেমিয়া
মঙ্গলবার, ২০ অক্টোবর, ২০০৯
"ডে লাইট সেভিংস" সিদ্ধান্তটি আসলে কার ?

গত ১৯ জুন যখন সময় গণনায় ডে লাইট সেভিংস পদ্ধতি চালু হলো দেশে, খটকা লাগলেও সাধুবাদ জানিয়েছিলাম। সাধুবাদ জানিয়েছিলাম কারণ নতুন চিন্তা গ্রহণ করার মানসিকতা সরকার ধারণ করছে তাই। খটকা লেগেছিলো এই কারণে যে যে লাইট সেভিংস এর এর মত টেকনিক্যাল একটা বিষয় বুঝার মত জ্ঞান আমাদের মূর্খ রাজনীতিবিদদের হলো কি করে সেটা ভেবে ! সে যাই হোক। সময় এক ঘন্টা এগিয়ে দেয়া হলো। কিন্তু এখন কবে আবার আগের সাথে এক ঘন্টা সমন্বয় করে পিছিয়ে দেয়া হবে সে সম্পর্কে সরকারের কোন সুস্পষ্ট ঘোষণা পেলাম না।
বৃহস্পতিবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০০৯
লাল শাড়ী’র মালিকিনী
আমি দুলি
আমি আড় চোখে চাইতে চাইতে
কানাগলি দিয়া হাঁটি।
ওগো লাল শাড়ীর মালিকিনী
তুমি কোথা হইতে কোথা যাও
আমি বুঝিতে না পারি।
বুধবার, ২ সেপ্টেম্বর, ২০০৯
একটি গান গাও আজ
আজ কোন কাজ নয়
আজ আলসেমির গলা জড়াজড়ি করে শুয়ে থাকবো।
যে যাই বলুক,
আজ কোন কথা নয়
হাসি নয় ঠাট্টা নয়
রাগ নয় অভিমান নয়
আজ দুঃখগুলোকে হিমঘরে পাঠিয়ে
পর্দা টানবো কাঁথা মুড়ি দেবো।
আজ কোন ফোনকল নয় টিভি নয়
স্মৃতিকাতরতা নয় সংক্ষিপ্ত বার্তা নয়
চুলোয় দাউ দাউ আগুণ নয়
জলকেলি নয় প্রার্থনা নয়
বাইনারী আবেগ বিনিময় নয়
কামনা জর্জরিত কল্পনাবিলাস নয়।
আজ নিজস্ব কঠিন কঠোর সাব্বাথ;
আজ কোন কাজ নয়
আজ আলসেমির গলা জড়াজড়ি করে শুয়ে থাকবো।
১৪ নভেম্বর ২০০৮
আকাশের গল্প
আমি আকাশ ছুঁইনি অনেক দিন,
দু'বছর আগেও নিয়ম করে প্রতি সন্ধ্যায়
অন্তত: একবার আকাশ ছুঁতাম।
আমাদের সম্পর্ক ছিলো বন্ধুত্বপূর্ণ,
সূর্যাস্তের পর আকাশ ছাদের খুব কাছাকাছি চলে আসতো
হাঁটতে হাঁটতে পাশাপাশি দুই বন্ধুর মত আমি
আকাশের হাত ধরে মৃদু ঝাঁকুনি দিতাম।
দু'বছর আগেও দুপুরবেলা রোদ গাঢ় হলে পর
ঘর্মাক্ত গায়ে আকাশকে ডেকে নরম বকুনি দিতাম।
নরম ধমকেই কাজ হতো, আকাশ আমার কথা শুনতো,
কখনো পাঠিয়ে দিতো ছায়ার মত যাযাবর মেঘদল,
কখনো বঙ্গোপসাগর থেকে উপকূলে হামলে পড়তো ঠান্ডা হাওয়া।
উদাসী হাওয়ায় স্বস্তি পেয়ে ফুরফুরে মেজাজে মোল্লার চা দোকানে বসে
এককাপ গরম চা, সাথে সদ্য প্যাকেট ভাঙা তাজা তামাক...
সন্ধ্যায়, বিদ্যুৎ বিভ্রাটের সময়টাতে আড়াইতলার খোলা বারান্দায়
আকাশের সাথে জমজমাট আড্ডা হতো,
আকাশের বন্ধুরা-- মিল্কিওয়ে, অ্যান্ড্রোমিডা নক্ষত্রপুঞ্জ, আরো যতো খটোমটো
নামের অজানা অচেনা মহাজাগতিক বন্ধুরাও সাথী হতো।
আড্ডার অন্তরঙ্গতায় তোমার কথাও হতো;
আকাশ সবই জানতো--
প্রথম দেখাদেখির সলাজ দৌড়, ফোনে খুনসুটির নানান সূত্র
ধরে হাসি ঠাট্টাও চলতো।
এমনকি কখনো কখনো আকাশ আমাদের সম্মানে উপহার দিতো
তারা খসার দৃশ্য- ভবিষ্যত সুখ কল্পনায় সংস্কারাচ্ছ্ন আমরা
মোনাজাতের ভঙ্গিতে মুখে হাত বুলিয়ে নিতাম।
শত মাইল দূর থেকেও মহাজাগতিক ঘটনাগুলো
দু'জনে মিলে উপভোগ করা যেতো--
যেমন পূর্ণিমা দেখতাম দু'জনে একই সাথে - যদিও মধ্যিখানে একবেলার পথ!
আমি আকাশকে নিয়ে সদ্য লিখিত কোন কবিতা উৎসর্গ
করবো বলে মনে মনে ঠিক করেছিলাম, একদিন তুমুল
আড্ডার ফাঁকে তাকে সে কথা জানিয়েও দিয়েছিলাম।
আমি কথা রাখতে পারিনি, যেমন তুমি রাখোনি;
আকাশকে নিয়ে কোন কবিতা লেখা হয়নি আর।
তুমি চলে যাওয়ার পর গত দু'বছর ধরে
আমি তাই একটিবারও আকাশের মুখোমুখি হইনি।
২ নভেম্বর, ২০০৮
একজীবনে (কুট্টিকালের একখান কোবতে)
নিঃস্ব হলাম বিশ্বলয়ে
সকল স্বপন হারিয়ে গেলো
অন্ধকারের অচিন গাঁয়ে।
সকল স্মৃতি সকল প্রীতি
শূন্য হল এক নিমেষে
স্থবির হলাম বধির হলাম
হৃদয় জ্বলে বিষে।
২৯.৩.১৯৯৭
কন্যা সিনান করিতে যায়
হিয়া দোলে তাহার টানে
ঢেউ খেলে পুকুরের পাড়ে
আমার মনটা আনচান করে।
কন্যা সিনান করিতে যায়
আঁচল লুটিয়া পড়ে ঘাটে
গলার ভাঁজে শ্যামল ত্বকে
রুপার চমক ঝিলিক মারে।
জলেশ্বরী জলেতে নামে
ডুব ডুব ডুব খেলে নরম স্রোতে
ভরা গতরের মায়া মিশে যায়
নিস্তরঙ্গ দেশে প্লাবন উঠায়।
তাহার দীঘল ঘন কেশে
আষাঢ়ের কালো মেঘেরা লুকায়
ভেজা ভেজা কেশে
যেন জলপ্রপাত ঝরে।
দূরে বসে দেখি সঙ্গোপনে
আর কেউ না দেখুক
আর কেউ না জানুক
শুধু আমি দেখিবো রুপের ঝলক।
- - -
মাইজদী, নোয়াখালী
২৪ অক্টোবর ২০০৮
শততম দুঃখ গাঁথা
কলেজ পড়ুয়া তরুণীরা বরাবরের মতই মুখরিত
আনন্দে প্রধান সড়ক দিয়ে হেঁটে যাবে,
বাতাসে তাদের বেণী দুলবে নিয়মিত ছন্দে।
মুঠোফোনে, এসএমএসে, ইমেইলে বিনিময় হবে হৃদয়ের মৌলিক ভাষা।
আমার মৃত্যুর পর শহরের প্রতিটি রাস্তায়
ট্রাফিক সিগনালগুলো নিয়মিত বিরতিতে জ্বলবে নিভবে
যান্ত্রিক সময় নির্ধারক একমুহুর্তও এদিক ওদিক করবে না।
আমার মৃত্যুর পর সিনেমাহলগুলোতে উপচে পড়া ভীড়ের কমতি হবে না
বক্স অফিসে নতুন নতুন হিট ছবি নতুন আয়োজনে আসতেই থাকবে;
সন্ধ্যার পর জেগে উঠবে মার্কেট, পার্ক, নিষিদ্ধ আনন্দের ঘর।
আমার মৃত্যুর পর শহরের প্রতিটি অলিগলিতে হবে স্বাভাবিক কলরব,
লেকের পাড়ের ঝুলন্ত রেস্তোরায় হাসবে সদ্য প্রেমে পড়া তরুণ তরুণীরা,
কোথাও সুনসান নিরবতা নামবে না, যেমন নেমেছিলো এক কারফিউর রাত্রিতে।
আমার মৃত্যুর পর আন্তর্জালের জগতে আলোড়ন উঠবে না,
সার্চের ঘরে কৌতুহলী কেউ লিখবে না নাম, জানতে চাইবে না
ঐ মায়ার জগতে আমার কোন অনুভূতি ছড়ানো আছে কি না।
আমার মৃত্যুর পর স্বজনরা কাঁদবে, ওদের কান্নাটাই স্বাভাবিক
— ওটা অস্বাভাবিক নয়, ভীষণ রকম প্রত্যাশিত।
আমার মৃত্যুর পর সবকিছুই স্বাভাবিক থাকবে
কেবল অস্বাভাবিক হবে এক জোড়া জীবিত চোখ
একদিন যে চোখে উপেক্ষার বাণী ছিলো, ছেড়ে যাবার
তাড়না ছিলো, সেই জোড়া চোখ ম্লান হবে মুহুর্তের অপরাধবোধে…
মাইজদী, নোয়াখালী
২৬ সেপ্টেম্বর, ২০০৮
শরৎ বিকেলে
জানালা গলে বখাটে রৌদ্র
আঘাত হানে বিকেলের ঘুমে।
কাশরঙা মেঘ চঞ্চলতা দেখায়
এই আসে এই যায়।
চপলা তরুণীরা হেঁটে যায়
তাদের ইষৎ সলজ্জ গালে চুমু
খেয়ে যায় কনে দেখা আলো;
কি নির্মম সুন্দর হেঁটে যায়!
শরৎ মেঘ কোথায় যায়?
কোথায় হারায়?
তরুণীরা হেঁটে যায়,
তরুণীরা কোথায় যায়?
মাইজদী, নোয়াখালী
১৮ সেপ্টেম্বর, ২০০৮
তুই
সারাক্ষণ ভ্রু কুঁচকে রাখছিস আজকাল।
তুই এখন শরীরের যত্ন নিচ্ছিস না, ঘামে ভেজা কাপড়
দলা করে রাখছিস আলনায়, খেয়াল আছে?
লোডশেডিং এর অবসরে চাঁদ দেখিস না বারান্দায় বসে,
পূর্ণিমা তোর কাছে অসহ্য লাগে?
তুই দুর্ব্যবহার করছিস ঘরের মানুষের সাথে,
বন্ধুদের কথার পিঠে ঠেস মারছিস বেশি বেশি।
তুই সিগারেট বেশি টানছিস এখন,
ছাই ফেলে নোংরা করছিস মেঝে।
তুই অসামাজিক হয়ে যাচ্ছিস,
কাউকে ফোন করিস না, একসাথে বসে
সিনেমা দেখিস না, গুণগুণ করে গান গাইতে গাইতে
পাড়ার রাস্তা দিয়ে হাঁটিস না।
কথার ফাঁকে তোর মুখে এখন খিস্তি আসে
তোর কপালে গোপন রাগের ভাঁজ ফুটে ওঠে আনমনে;
কিসের অভিমানে?
তু্ই আগের মত নেই; তোর কী হয়েছে?
১৩ সেপ্টেম্বর, ২০০৮
যখন তোমার শহরে যাই
আর কোন শহর আপন মনে হয় না; আপন হয়ে ওঠে না।
তুমি যে শহরে আছো, সে আমার জন্ম শহর নয়।
স্বভাবতই আমার আপন শহর নয়,
প্রিয় নয়, নয় পুরোনো ভৃত্যের মত বিশ্বস্ত।
তোমার সুবাদে ওই শহরের প্রতিটি রাস্তা আমার হয়ে ওঠার প্রবল
সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও, আমার হয়ে ওঠে না।
তোমার শহর তার সমস্ত ঐশ্বর্যের ডালি মেলে ধরেও
আমাকে সুখী করতে পারে না,
অসুস্থ্য বোধ করি কৃত্রিম চাকচিক্যের শহরে।
তোমার শহর আমার শহর নয়,
তবু তা আমার হয়ে উঠেছিলো কয়েকটি মাস।
যেমন হাসপাতালের নার্সগুলো আপন হয়ে ওঠে কিছুকাল।
তারপর রোগ সারলে পরে ভুলে যাওয়া হয় ক'দিন পরেই।
তোমার শহরের প্রতিটি ধূলিকনা আমাকে উত্তপ্ত লেজারবীমের মত আঘাত করে,
আমাকে অসুস্থ্য করে। তারপরও আমি যাই, কখনো যেতে হয় দায়িত্বের টানে।
তখন ওই শহরের প্রতিটি রিক্সা খেয়াল করি,
প্রতিটি সিএনজি, প্রতিটি বাসের জানালার পাশের সীট।
প্রতিটি রাস্তার পাশের আকাশ ছোঁয়া অ্যাপার্টমেন্টের জানালার পর্দা গলে উঁকি দেয় তোমার মুখ-
তোমার মুখের আদলের মত ছায়া ক্রমাগত বিভ্রমে নিমজ্জিত করে আমায় ।
তোমার শহরের সকল তরুণী সেকেন্ডের ভগ্নাংশ সময়
আমার হৃদস্পন্দন বন্ধ করে দেয়,
সবার মাঝে যেন তোমার ছায়া দেখে চমকে উঠি;
পরক্ষণেই ভুল বুঝতে পেরে দৃষ্টি ফিরিয়ে নিই।
তোমার শহরে গেলে আকাশছোঁয়া দালানের শোভা দেখি না,
শপিং মল খুঁজি না, লোভনীয় অ্যাপার্টমেন্টের বিজ্ঞাপন সন্ধান করি না।
তোমার শহরে আমি শেয়ার কেনাবেচা করতে যাই না,
উচ্চ বেতনের চাকরির ইন্টারভ্যু ও দিতে যাই না।
বিশ্বাস করো, জাগতিক কাজের ছুতোয়
ওই নির্মম শহরে কেবল তোমাকেই খুঁজতে যাই
আর কিছু নয়...
১৬ সেপ্টেম্বর, ২০০৮
বহুগামী
জুতো পাল্টাই ছ’মাসে একবার,
মুঠোফোনের মডেল পাল্টে একবার বছরে,
খাদ্যাভ্যাস তিনবেলায় তিনরকম!
সিগারেট শুরু গোল্ডলীফে, তারপর
ট্রিপল ফাইভ হয়ে বেনসন।
প্রতিদিনকার আড্ডায় নবাগত মুখ
নিত্য নতুন বৈচিত্র্যে ভরপুর।
ভালো লাগে নতুন ফিল্ম, নতুন সুগন্ধী,
নতুন অর্কিড, নতুন প্রযুক্তি।
স্বভাবে বহুগামী, চিন্তায় বহুগামী,
সচেতনে বহুগামী, অবচেতনেও বহুগামী।
কেবল তোমার বেলায় বিপরীত-
সেই যে প্রেমে পড়লাম, নতুন করে আর
কাউকে পাওয়ার ইচ্ছে জাগলো না!
মাইজদী, নোয়াখালী
৬ সেপ্টেম্বর ২০০৮
শুক্রবার, ২৯ মে, ২০০৯
চিন্তাটা ব্যক্তিস্বার্থকেন্দ্রিক
চিন্তাটা ব্যক্তিস্বার্থকেন্দ্রিক
আমি যে মানবাধিকারের কথা বলি, সে আমার মহত্ত্ব নয়।
চিন্তাটা খুবই সংকীর্ণ; তুমিই তার সোজাসাপটা লক্ষ্য প্রিয়তমা।
নির্মম পৃথিবীতে তোমার বঞ্চনা আমি সইতে পারবো না।
তাই আমি চাই মানবাধিকার সংবেদনশীল সমাজ।
আমি যে শিশু অধিকারের কথা আওড়াই, তার সাথেও তোমার স্বার্থ জড়িত;
তোমার, মানে আমাদের শিশুকে সুন্দর একটি পৃথিবী উপহার দিতে চাই বলে।
আমি যে সমানাধিকারের কথা বলি, তা কোন লৈঙ্গিক সমতার
চেতনা থেকে নয়-স্রেফ তোমার স্বার্থে।
আমি কি তোমার চেয়ে বেশি পেতে পারি কিছু?
কিভাবে ভালোবাসার সাথে বৈষম্য বসবাস করবে বলো?
আমি তাই সমানাধিকারের কথা বলি, ন্যায্যতার কথা বলি।
আমি যে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার কথা বলি,
সে তোমার জন্য নিরাপদ রাষ্ট্র চাই বলে। আমার প্রিয়তমাকে
নৈরাজ্যের মাঝে রেখে আমি কি নিশ্চিন্তে ঘুমুতে পারি?
এবার বুঝতে পারছো কেন আমি মহৎ বুলি আওড়াই?
বন্ধুরা যেমনটি ভাবে, আদতে তেমন উদার নই আমি; বলতে পারো চরম ব্যক্তিস্বার্থবাদী।
আমি শুদ্ধ হয়ে ওঠার আপ্রাণ সাধনা করি তোমার কষ্ট চাই না বলে।
সুধীজনের মনে প্রশ্ন উঠতে পারে, তুমি চলে যাওয়ার পরও কেন আমি এসব বলে যাই!
কেন ভালোবাসার দায়মুক্ত হয়েও আমার ভেতরে জন্ম নেয় না ক্রুদ্ধ ফ্যাসিস্ট?
তবে কি এখনো, একটি মুহুর্তও তোমায় ভালো না বেসে থাকি না?
মাইজদী, নোয়াখালী
২৯ আগস্ট, ২০০৮
শনিবার, ২ মে, ২০০৯
কাতার ভ্রমণ (শেষ পর্ব)
বৃহস্পতিবার, ৩০ এপ্রিল, ২০০৯
কাতার ভ্রমণ (পর্ব-৫)
Qatar Tribune এ সম্মেলন এবং আগের দিনের বিল গেটসের বক্তৃতার খবর হেডলাইন করলো। সেই পেপার কাটিং প্রদর্শিত হচ্ছে।
নাশতার টেবিলে এক হলাম ড. অনন্য রায়হান, আশির আহমেদ, ফাহিম হুসেইন, ফরহাদ ভাই। আশির ভাই তার ওয়ান ভিলেজ ওয়ান পোর্টাল পেপার নিয়ে আলোচনা করছিলেন। সবাই মিলে আলোচনা হলো দেশে কিভাবে আইসিটি'র উন্নয়নে কাজ করা যায়। সিদ্ধান্ত হলো ড. অনন্য রায়হান উদ্যোগ নিবেন প্রযুক্তিবিদদের এক করে কোন সম্মেলন করা যায় কিনা। তাহলে পরবর্তীতে নতুন নতুন আইডিয়া নিয়ে কাজ করা যাবে। সম্ভাব্য অর্গানাইজিং কাজগুলো নিয়ে আলোচনা হলো।
[caption id="attachment_52592" align="alignnone" width="300" caption="ফাহিম হুসেইনের প্রদর্শিত পেপার"]
বিকেলে আসলো Carlos A. Primo Braga, Director, Economic Policy and Debt in the Poverty Reduction and Economic Management Network (PREM) at The World Bank। তার বক্তৃতায় বেশ হিউমার মেশানো ছিলো। কিছুক্ষণ পর পরই তার কথায় হাসির হুল্লোড় উঠতো। ইংরেজী বক্তৃতা অনুসরণ করার ক্ষেত্রে বিরাট সমস্যা। দেখা গেলো কেউ কিছু বলার পর মনে মনে তার অনুবাদ করছি, এর মধ্যেই আরো কয়েকলাইন বলে ফেললো। শেষে সবকিছু মিলিয়ে একটা তালগোল পাকিয়ে যাওয়ার জোগাড়। মনে রাখাও কঠিন হয়ে দাড়ায়! সরাসরি ইংরেজীতে চিন্তা করার কোন পদ্ধতি থাকলে ভালো হতো!
এর মধ্যে ভাতিজা দেশে ফিরে যাওয়ার সময় ঘনিয়ে এলো। এসেছিলো আমার দুদিন আগে। যাবেও আমার দুদিন আগে। যাওয়ার আগে তার কাছে স্থানীয় একটা সীম কার্ডসহ ফোন ছিলো। ১৫ তারিখ কাতার আসার পর আমার পরিচিত গুলজার ভাই তার থাকার ব্যবস্থা করেছিলো তার এক সহকর্মীর বাসায়। সহকর্মীর একটি ফোন তার কাছে ছিলো যোগাযোগের জন্য। যাওয়ার আগে আমার কাছে ফোনটা রেখে গেলো পৌছে দেয়ার জন্য। আমি সন্ধ্যার কিছুক্ষণ আগে কলি আপাকে ফোন দিলাম।
কলি আপা হলো অলৌকিক হাসান এবং টুটুল ভাইয়ের বন্ধু। কাতারেই সেটল করেছে। দেশে থাকতেই ফোন নাম্বার সংগ্রহ করেছিলাম। আমি ভেবেছিলাম কলি আপা হয়তো আমাকে চিনবে না। কিন্তু উনি আগেই টুটুলের সাথে ফোন কথা বলেছিলেন। নাম বলতেই বলে উঠলেন, "আপনার তো ১৫ তারিখ আসার কথা। এত দেরিতে ফোন করলেন!"
ফোনে তার জীবনসঙ্গী আরিফ ভাইয়ের সাথেও পরিচয় হলো। দুজনেই দারুণ মানুষ। অল্প কথাতেই আপন করে নেবার অসাধারণ ক্ষমতা! ঠিক হলো আমি হোটেলে ফিরলে তারা আসবেন।
ডিনার শেষে দেখি আমার পরিচিত সবাই আগেই চলে গেছে। সবার ফ্লাইট রাত ১১টায়। তাই আগেই সম্মেলন থেকে বেরিয়ে গেছে। আমার যেহেতু দুদিন পর, তাই ধীরে সুস্থে নির্ধারিত বাসে রাত ৮.৩০টা নাগাদ হোটেলে ফিরে আসলাম। হালকা বিশ্রাম নিয়ে প্রতীক্ষা। দশটার পরে কলি-আরিফ দম্পতি এলেন। এসেই আর পরিচয় পর্বের জন্য সময় নষ্ট করলেন না। গাড়ী নিয়েই শহরের প্রধান প্রধান আকর্ষণীয় জায়গাগুলোতে নিয়ে গেলেন। সেই সাথে অভিজ্ঞ গাইডের মত বিস্তারিত বর্ণনা। আমি তাদের কর্মতৎপরতায় যারপরনাই মুগ্ধ হলাম। এই দুজনের সাথে দেখা না হলে আমার কাতার ভ্রমণ অসম্পূর্ণ থেকে যেতো।
প্রথমে গেলাম কাতারের অলিম্পিক ভিলেজে। স্টেডিয়ামের পাশে দারুণ একটা মিনার করেছে। তার পাশেই কারফুর নামে একটা বিশাল শপিং মল। শপিং মলটা দেখে মুগ্ধ না হলে উপায় নেই। বিশাল স্পেস নিয়ে একটাই ফ্লোরে অবস্থান। একদিক থেকে হাঁটা শুরু করলে শেষ হতে চায় না। ছাদটা যেন আকাশের মত সাজিয়েছে। চাঁদ উঠছে। মেঘ ভেসে বেড়াচ্ছে।
[caption id="attachment_52593" align="alignnone" width="300" caption="চাঁদ উঠেছে কারফুরের আকাশে"]
মার্কেটের একেক অংশ একেক শহরের মত করে থিমেটিক্যালি সাজানো। ভেনিসের মত করে এক অংশ সাজানো। ভেনিস শহরের মত করেই টাইলস, নকল বাড়ী, লেক ইত্যাদি ইত্যাদি। কাতার গেলে এই মার্কেটে অবশ্যই একবার হলেও যেতে ভুলবেন না কেউ। মুগ্ধ না হওয়ার কোন কারণ নেই। আমরা যখন পৌছালাম তখন অবশ্য ভীড় একেবারেই নেই। বন্ধ হওয়ার সময় হয়েছে। দ্রুত এক চক্কর দিয়ে বেরিয়ে এলাম।
[caption id="attachment_52594" align="alignnone" width="300" caption="শপিং মল কারফুরের একাংশ"]
দু:খের কথা হলো, ক্যামেরা না থাকায় ছবি তুলতে পারলাম না। মোবাইলে দুএক্টা তুলেছিলাম। তবে মোবাইলে ছবি তুলে আরাম নেই, কোয়ালিটিও নেই। তাই ছবি তোলা হলো না। তাছাড়া মোবাইলে রাতের বেলা ছবি একেবারেই যাচ্ছেতাই আসে। তাই ছবি তোলার প্রচেষ্টা বাদ দিলাম। কলি আপা দূ:খপ্রকাশ করলেন। আগে জানালে তাদের ক্যামরা নিয়ে আসতে পারতেন।
এরপর গেলাম শহরের ভেতরের পুরোনো শহরে। কাতারের এই জিনিসটা আমার খুব ভালো লেগেছে। শহরের একেক অংশ একেক রকমভাবে সাজিয়েছে। যেমন একটা অংশে তাদের পুরোনো ঐতিহ্যবাহী স্থাপত্যকলার অনুসরণে সাজানো হয়েছে। সবকিছু পুরোনো আমলের মত তৈরি করা। বাড়ী, ঘর, দোকানপাট। ঢুকলেই মনে হবে ১০০ বছর অতীতে ফিরে গেছি।
আরেকটি অংশে সব উঁচু উঁচু দালান। আলোকসজ্জিত আকাশছোঁয়া দালান শুধু শহরের সমুদ্রপাড়ে ঐ অংশেই আছে। এছাড়া দোহার অন্য অংশে দালানগুলো উচু নয়। বিষয়টা চোখের জন্য খুবই স্বস্তিদায়ক মনে হলো আমার।
সমুদ্র পাড়ে কিছুক্ষণ হাঁটলাম। এই অংশে সমুদ্রের পাড় বাধাই করা। একেবারেই শান্ত সমুদ্র। পারস্য উপসাগরে এত শান্ত এটা আগে ভাবি নাই। দখিণা বাতাসে আমার স্থানীয় নদীতেও এর চেয়ে বড় স্রোত আছড়ে পড়ে! সে যাই হোক, সমুদ্র পাড়ে একটা দালান দৃষ্টি আকর্ষন করলো। কিছুক্ষণ পর পরই রঙ পাল্টাচ্ছিলো। দালানটা ঠিক কিসের এখন মনে পড়ছে না। কলি আপা বলছিলেন, বছরের এই সময়ে আবহাওয়া সাধারণত এত ভালো থাকে না। আমার ভাগ্য ভালো চমতকার একটা সময়ে গিয়েছি। আসলেই তাই। বাতাস একেবারেই ঠান্ডা। মরুভূমির বাতাস যেরকম উত্তপ্ত হওয়ার কথা, তার ধারে কাছেও নাই। একেবারেই ঝিরিঝিরি ঠান্ডা বাতাস। রাতের বেলা সমুদ্র পাড়ে প্রচুর লোক হাটতে আসে। সময় কাটানোর জন্য দারুণ স্থান।
এরপর গেলাম হেরিটেজ পার্কে। সমুদ্র পাড়ের কাছাকাছিই অবস্থান। হেরিটেজ পার্কে দেখলাম শুধু ফ্যামিলি অ্যালাউড। ব্যাচেলররা পার্কের সীমানার বাইরেই থাকে। আমরা সেখানে পৌছালাম রাত সাড়ে বারোটার দিকে। চা খেতে খেতে পার্ক ঘুরে দেখলাম। তখনো দেখি শিশুরা পার্কে খেলছে। তাদের অভিভাবকরা ঘাসের উপরে বসে বসে গল্প করছে। ফ্যামিলি পার্কের ধারণাটা আমার কাছে চমকপ্রদ মনে হলো। আমাদের দেশে তো রাতের বেলা পার্কের যে পরিবেশ, তাতে করে ফ্যামিলি নিয়ে যাওয়ার কথা কল্পনাই করা যায় না!
কলি-আরিফ দম্পতি আমাকে যখন হোটেলে পৌছে দিলেন তখন রাত প্রায় দেড়টা বাজে। এতরাত পর্যন্ত আমাকে তারা সময় দিয়েছেন যে শুধু মুখে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলেই মন তৃপ্ত হচ্ছে না। অবশ্য এখানেই শেষ নয়। পরের দিনও তাদের সহযোগিতা পেয়েছি। তাদের সহযোগিতা না পেলে কেনাকাটাও করা হতো না। সেই গল্প পরের পর্বে।
মঙ্গলবার, ২৮ এপ্রিল, ২০০৯
কাতার ভ্রমণ (পর্ব-৪)
সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন শুরু হলো ঢিলে ঢালা ভাবে। যথারীতি বাসে করে এডুকেশন সিটি, কার্নেগী মেলন ক্যাম্পাস। তারপর ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন পেপার দেখা, মতবিনিময়। ফাঁকে ফাঁকে খাওয়া দাওয়া।
এর মাঝে মনে হলো ক্যাম্পাসটা ঘুরে দেখা হলোনা। তাই ঘুরে ঘুরে ছবি তুলতে লাগলাম। প্রথম দিনই বলা হয়েছিলো দ্বিতীয় দিনে সিকিউরিটির কড়াকড়ি থাকবে। কারণ বিল গেটস কী-নোট উপস্থাপন করবে। গেটসের কী-নোট উপস্থাপনের সময় সন্ধ্যা ৬টা। কিন্তু সকাল বেলা থেকেই সিকিউরিটি সতর্ক। পরিচয় পত্র ছাড়া কাউকে কনফারেন্স হলে ঢুকতে দিচ্ছেনা।
দোহার দৈনিক পত্রিকাতেও বিলের আসার খবর প্রকাশিত হয়েছে। সেই পেপার কাটিং দেখলাম দেয়ালে সাঁটা হয়েছে।
আমি আর ভাতিজা ক্যাম্পাসে ঘুরে ঘুরে ছবি তুলছি। একটা জায়গায় ত্রিমাত্রিক দেয়াল চিত্র দেখলাম। দারুণ লাগলো দেয়ালচিত্রগুলো। ছবি তুলতে তুলতে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন রুমে ঢুকছি। প্রায় ফাঁকা বিভিন্ন রুম। কাউকে দেখা যাচ্ছিলোনা। সিকিউরিটির কাউকেও দেখছিলাম না। নিশ্চিন্ত মনে ছবি তুলছি। হঠাৎ ভোজবাজির মত এক সিকিউরিটি কর্মীকে দেখা গেলো। বললো এই জায়গায় ক্যামেরায় ছবি তোলার অনুমতি নেই। আমাকে বললো ছবি মুছে ফেলতে। কোনমতে সর্বশেষ ছবিটা মুছে তাকে বুঝ দিলাম। সে ভাবলো বুঝি একটা ছবিই তুলেছি! তাই ছেড়ে দিলো।
হাঁটতে হাঁটতে ক্যাম্পাসের পাশে মেডিকেল কলেজ প্রাঙ্গণে আসলাম। বেলা তখন তিনটা। হঠাৎ দেখি দুটো গাড়ী আসলো। পেছনে পুলিশের একটা কার। গাড়ীর ভেতরে দেখেই চিনলাম, বিল গেটস চলে এসেছে। বিল নিজেই গাড়ী থেকে নেমে দরজা ধরে দাড়িয়ে থাকলো। আরো দুজন নামার পর বিল নিজেই দরজা বন্ধ করলো। তারপর ক্যাম্পাসে ঢুকে গেলো।
মনে হলো, কিছুদিন আগেও যে পৃথিবীর সেরা ধনী ছিলো, তার আচার আচরণ দেখলে মনে হয় না তেমন! অথচ আমরা কিছু কাঁচা টাকা পয়সা হলেই "মুই কি হনুরে" টাইপ ভাব ধরি!
আমাদের দেশে এরকম কল্পনাই করা যায় না। বিল যখন বাংলাদেশে আসলো, তখনকার কথা মনে হলো। সর্বক্ষণ তার চারপাশে মানুষজন গিজগিজ করছিলো। কাউকে অতিরিক্ত ভক্তি না করতে পারলে আমাদের মন তৃপ্ত হয়না মনে হয়!
বিল গেটস আইসিটি কাতারের কর্মকর্তাদের সাথে মিটিং সেরে সম্মেলন কক্ষে আসলো। প্রায় ঘন্টাখানেক তার বক্তৃতা দিলো। শিশুদের জন্য কাজ করার, দরিদ্রদের জন্য কাজ করার প্রতি গুরুত্বারোপ করলো। বক্তৃতা শেষে প্রশ্নোত্তর পর্বে সঞ্চালক মজা করে বললেন, বিলকে উইন্ডোজ নিয়ে প্রশ্ন করা যাবেনা। এই নিয়ে একচোট হাসি হয়ে গেলো।
বিলের বক্তৃতার সময় কাতারের আমীরের দ্বিতীয় স্ত্রী উপস্থিত ছিলো। বিলের বক্তৃতা এবং প্রশ্নোত্তর পর্ব শেষ হওয়ার পর সবাই দাড়িয়ে হাততালি দিলো। আমীরের স্ত্রীও বিলের সাথে হ্যান্ডশেক করে তারা সম্মেলন কক্ষ থেকে বেরিয়ে গেলেন।
এরপর যথারীতি ডিনারে সেরে আমরা হোটেলে ফিরলাম। হোটেল ফিরে বেরুলাম মার্কেটে যাবো বলে। কিন্তু রাত দশটার পর মার্কেটে লোকজন তেমন একটা থাকে না। তাছাড়া আল সাদ এলাকায় কোন সস্তা মার্কেট ও পেলাম না। সব দামী ব্রান্ডের দোকান। তাই কেনাকাটা স্থগিত রেখে হোটেলে ফিরে আসলাম।
শুক্রবার, ২৪ এপ্রিল, ২০০৯
কাতার ভ্রমণ (পর্ব-৩)
প্রধান গেটের সামনে আসতেই সেন্সর নিয়ন্ত্রিত কাঁচের দরজা নিজ থেকেই খুলে গেলো। ভিতরে প্রবেশ করতেই লোকজনের আনাগোনা টের পেলাম। আমি আশা করেছিলাম আন্তর্জাতিক সম্মেলন যেহেতু, নিদেনপক্ষে একটা তোরণ হলেও থাকবে। দেশে ছোটখাট অনুষ্ঠানেও সাজগোজের বাহার দেখে এমন ধারণাই তৈরি হয়েছিলো। আন্তর্জাতিক তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি এবং উন্নয়ন বিষয়ক সম্মেলনে তেমন কিছু না দেখে বেশ অবাক হয়েছিলাম।
ভেতরে রেজিস্ট্রেশন ডেস্কে গিয়ে নিবন্ধন করলাম। ততক্ষণে ২টা বেজে গেছে। লাঞ্চ সেরে ফেলেছে বেশির ভাগ অংশগ্রহকারী। ভাতিজাকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করলাম। পেলাম না। এদিকে ক্ষিধেয় পেট মোচড় দিচ্ছে। তাই আগে লাঞ্চ সেরে নিলাম। বুফে লাঞ্চ, নাশতাও বুফে সিস্টেমে। খাবার দাবারের কোন কমতি নেই। আমি খাঁটি স্ট্রবেরি, পাইনঅ্যাপেল, অরেঞ্জের খাঁটি জুস পান করতে করতে ভাবলাম, তেল বেচা টাকা দিয়ে দুনিয়ার সবকিছুই এরা ভোগ করছে। আর দেশে আমরা ম্যাঙ্গো জুসের নামে খাঁটি কুমড়োর জুস খাই!
অংশগ্রহণকারীরা বিভিন্ন কর্মশালায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। দেরিতে আসার কারণে সবকিছু বুঝতে কষ্ট হচ্ছে। এক রুমে উঁকি দিয়ে দেখি বসার জায়গাও নেই। তাই এদিক ওদিক ঘোরাঘুরি করে সবকিছু বোঝার চেষ্টা করলাম। ক্যাম্পাসের সামনেও ঘুরে আসলাম। তবে রোদের তীব্রতায় চোখ ধাঁধিয়ে যায় তাই বেশি দূর গেলাম না।
একদিকে দেখি অংশগ্রহণকারীদের পেপার প্রদর্শন হচ্ছে। সেখানে কলকাতার একজনের সাথে পরিচয় হরো। তীর্থঙ্কর নাম। বাংলাভাষী পেয়ে ভালৈ লাগলো। তার পেপার অটোমেটেড ব্রেইল সিস্টেম নিয়ে। তার শিক্ষক অনুপম বসুসহ যৌথ উদ্যোগ। তীর্থঙ্করের সাথে কথা বলতে বলতে পরিচয় হরো একজনের সাথে। প্রথমে ভেবেছিলাম ইন্ডিয়ান। আমেরিকান উচ্চারণে ইংরেজী শুনে এশিয়ান চেহারা দেখে তেমনই ধারণা হয়েছিলো। পরিচয় হতে দেখি বাংলাদেশী। নাম ফাহিম হুসেইন।
Carnegie Mellon এর ইনফরেশন সিস্টেম বিষয়ের শিক্ষক। তাঁর নিজেরও একটা পেপার প্রদর্শিত হচ্ছিলো। মজার বিষয়, তাঁর দেশের বাড়ীও নোয়াখালী।
ঘুরতে ঘুরতে ভাতিজার দেখা পেলাম রেজিস্ট্রেশন ডেস্কে। স্বেচ্ছাসেবকের দায়িত্বপালন করছে। আমার পালা ছিলো বিকেল ৪টা থেকে ৫.৩০টা। কাজ ছিলো রেজিস্ট্রেশনে সহায়তা করা, তথ্য সহযোগিতা করা।
"]
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি এবং উন্নয়ন বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের রেজিস্ট্রেশন ডেস্কে
বাংলাদেশ থেকে যাওয়া ডি.নেট'র প্রধান ড. অন্যন্য রায়হান, ফরহাদ ভাইয়ের সাথে দেখা হলো। শহীদ ভাইয়ের সাথে দেখা হলো। জাপান থেকে এসেছিলো ড. আশির আহমেদ। তার সাথে আলোচনা করতে করতে ব্লগের প্রসঙ্গও আসলো। দেখলাম জ্বীনের বাদশা ভাইকে চিনে উনি।
Carnegie Mellon বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরের ডিজাইন অসাধারণ! স্থাপত্যশৈলী মুগ্ধ হওয়ার মত। আরাম আয়েশের জন্য দেখলাম শোয়ার ব্যবস্থাও আছে। সম্মেলনের ফাঁকে ফাঁকে বিশ্রাম করতে চাইলে বসা অথবা শোয়ার ব্যবস্থাও আছে।
পুরো প্রাঙ্গণ জুড়েই ওয়াইফাই কানেকশন আছে। দু;খ হলো ল্যাপটপটা কেন নিলাম না। আমি ভেবেছিলাম ভাতিজা যেহেতু নিচ্ছে, আমি প্রয়োজনে তারটাই ব্যবহার করবো। তাতে করে বোঝাও কমবে। কিন্তু বাস্তবে আসলে হয় না। নিজের সাথে থাকলে লাইভ ব্লগিং করা যেতো। আরেক গাধামী করেছি ভাতিজার উপর ভরসা করে ক্যামেরাটাও নিই নাই। যেহেতু সে আমার দুদিন আগে গিয়েছে, ফিরে এসেছেও দুদিন আগে, ফলে আমার নিজের ছবি তোলাই হলোনা। এই পর্বগুলোতে ব্যবহৃত ছবির বেশির ভাগই ভাতিজার তোলা।
প্রথম দিনের ডিনার সারতে সারতে রাত ৮.৩০। তারপর সম্মেলনের নির্ধারিত বাসে করে হোটেল ফিরে আসলাম। এর মধ্যে মজার বিষয় লক্ষ্য করলাম। আমাদের অপেক্ষায় থাকা বাসগুলো সবসময়ই এসি চলছিলো। খালি অবস্থাতেও। ভাবলাম যে দেশে খাবার পানির চেয়ে তেল সস্তা, সেখানেও এরকম হবেই! প্রসঙ্গত, কাতারে খাবার পানির লিটার ১ রিয়াল। আর তেলের লিটার .৭৫ রিয়াল।
হোটেল ফিরে ভাবলাম শহরটা দেখতে বেরুবো। কিন্তু ক্লান্ত শরীরে আর বেরুতে ইচ্ছে করলো না। তাই পরের দিনের জন্য প্ল্যানটা স্থগিত রেখে ঘুমাতে গেলাম।
কাতার ভ্রমণ (পর্ব-২)
দুপুরে গেলাম গুলশানে কাতার এয়ারওয়েজের অফিসে। ৪/৫ টা বুথে তারা সেবা দিচ্ছে। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর এক বুথে ডাক পড়লো। খুলে বলতেই ভদ্রলোক টিকিটের তারিখ পরিবর্তন করে দিলেন। যাওয়ার তারিখ ১৫ তারিখের বদলে ১৭ তারিখ, আসার তারিখ ১৯ থেকে ২১ এ পরিবর্তন করে দিলেন। ১৬ তারিখে সব সীট পূর্ণ ছিলো। তা নাহলে পরের দিনই যেতে পারতাম। পুরো কাজটা হলো বিনা ফিতে। বুথের ভদ্রলোক জানালেন, প্রথম বার পরিবর্তন ফ্রি। দ্বিতীয় বার পরিবর্তন করার ফি মাত্র ৩০ $ ।
ভাবলাম, এই জটিলতায় পড়ে একটা লাভ হয়েছে অনেক কিছু জানতে পেরেছি। নাহলে অভিজ্ঞতাটা অসম্পূর্ণ থেকে যেতো। সব বিপদের মাঝেও মনে হয় কিছু প্রাপ্তি থাকে!
সেই সাথে ট্রাভেল এজেন্টদের ধান্ধাবাজিটাও পরিস্কার হলো। মানুষের অসচেতনতার সুযোগ নিয়ে তারা প্রতারণাই করে বিভিন্ন সময়ে। এই শিক্ষাটাও কাজে লাগবে আমার।
তারপর ১৭ তারিখ সকালে খুব ভোরে এয়ারপোর্ট। এবার আত্মবিশ্বাস নিয়েই গেলাম। ভাইয়াকে নিষেধ করলাম এয়ারপোর্ট পৌছে দিতে। ড্রাইভার গাড়ী নিয়ে এয়ারপোর্টে পৌছে দিলো। ইমিগ্রেশনেও তেমন একটা ঝামেলা হলো না। নির্দিষ্ট সময়েই প্লেন ছাড়লো। প্লেনে পাশের সীটেই পরিচয় হলো এক নোয়াখালীরই লোকের সাথে। ভদ্রলোক রোমে থাকেন। কানেক্টিং ফ্লাইটে যাচ্ছেন। তার সাথে গল্প করতে করতে সময়টা ভালোই কাটলো। জানালার পাশে সীট পেলাম না বলে দূ:খ হলো। ঠিক করলাম ফেরার সময় অনুরোধ করবো জানালার পাশে সীট দিতে। প্রথমবার জড়তার কারণে অনুরোধটা করা হয়নি। বিমানবালা দেখতে সুন্দর হলেও তেমন সুবিধার মনে হলো না। খাবারের সাথে আমাকে পানি দিতেই খেয়াল করলো না। পরে চেয়ে নিতে হয়েছে।
অলৌকিক হাসান ভাই আগেই বলেছিলো, কাতার এয়ারওয়েজে সুরাপানেরও ব্যবস্থা আছে। কিন্তু প্রথমবার বলে কিছুটা জড়তার কারনে মুখ ফুটে চাওয়া হলোনা। তাছাড়া খাবারবহনকারী ট্রেতেও রঙীন পানীয়ের কোন বোতল দেখা গেলোনা। আমিও সংযমী হলাম।
কাতার সময় ১১.৩০ এ প্লেন নামলো। ইমিগ্রেশনের বোরখা পরা নারীটা আমাদের দিকে একবার তাকালোনা পর্যন্ত। যান্ত্রিকভাবে পাসপোর্ট হাতে নিয়েই কম্পিউটারে চেকিং করে সীল মেরে দিলো। সামান্য বাক্য বিনিময়ও হলোনা। এমনকি আমার ভিসার কাগজও দেখলোনা। বুঝলাম যে আমার ভিসা নাম্বার তাদের ডাটাবেসে আছে। ১৫ তারিখে যদি যেতে পারতাম, তাহলে খুব স্বাভাবিকভাবেই ভিসা পেয়ে যেতাম মনে হয়!
Merweb Hotel হোটেল থেকে আমাকে রিসিভ করার জন্য গাড়ী থাকার কথা। বেরিয়ে দেখি আমার হোটেলের কেউ নাই। আমি বাইরে গিয়েও উঁকিঝুঁকি মেরে দেখলাম। কেউ নাই। কিছুটা নার্ভাস হয়ে আবার ভেতরে আসলাম। মিনিট পাঁচেক পর দেখলাম ড্রাইভার আমার নাম লেখা প্ল্যাকার্ড হাতে আসলো। আমিও হাঁফ ছেড়ে বাঁচলাম।
শুরুতেই দেখি ট্রাফিস জ্যাম। আমার ধারণা ছিলো শুধু ঢাকাতেই জ্যাম লাগে। এখন দেখি বিদেশেও এই বিরক্তিকর জিনিস আছে! রাস্তার পাশে পাশে খেজুর গাছ। ঢাকাতে রাস্তার পাশে খেজুর গাছ লাগানোর বুদ্ধি যার মাথা থেকে এসেছে, সে সম্ভবত বিদেশ বলতে মধ্যপ্রাচ্যেই গিয়েছিলো!
হোটেলে পৌছে রেজি: করে রুমে জিনিসপত্র রেখেই বেরিয়ে এলাম। এর আগে হোটেল থেকে ৫০ $ ভাঙিয়ে কাতারের রিয়াল করে নিলাম। রেট পেলাম প্রতি ডলার ৩.৪৫ করে। পরে জেনেছি, বাইরে থেকে আরো ভালো রেট পাওয়া যায়। মার্কেট থেকে পরে পেয়েছি ৩.৬০ করে।
বাইরে ট্যাক্সি খুঁজে পেতেই অনেক সময় লাগলো। কাতারে ট্যাক্সি খুবই কম। রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত ট্যাক্সি সার্ভিস চলে। ভাড়া বেশি। প্রাইভেট ট্যাক্সিও আছে, তবে সেগুলো দেখে চেনা কষ্টকর। কিছুক্ষণ পর একটা ট্যাক্সির দেখা মিললো। দেখি ড্রাইভার বাংলাদেশী, নাম শ্যামল; কুমিল্লায় বাড়ী। ভাবলাম, ভালৈ হলো। বিদেশ বিভূঁয়ে বাঙালী পাশে পেয়ে বুকে বল পেলাম। বাংলায় কথা বলতে বলতে দোহা এডুকেশন সিটি এলাকায় গেলাম। শহরের একটা প্রান্তে ১০-১২টা ভার্সিটি নিয়ে এডুকেশন সিটি তৈরি করা হয়েছে গত কয়েক বছরে। কাতারের আমীরের দ্বিতীয় স্ত্রী'র উদ্যোগে মূলত এই সিটি তৈরি হয়েছে। কোটি কোটি টাকা খরচ করে অবকাঠামো তৈরি করে সব আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজের ক্যাম্পাস বসিয়ে দেয়া হয়েছে। বুঝাই যায়, আমীরের লেবাননী স্ত্রীর আমেরিকা প্রীতি প্রবল!
ট্যাক্সি থেকে নেমে পুরা হতভম্ব হয়ে গেলাম। কোথাও কেউ নেই। ক্যাম্পাসে ২/৪ জন শ্রমিক ছাড়া কারো টিকিটির ও দেখা মিললো না। ভুল যায়গায় আসলাম কিনা ভাবতে ভাবতে প্রধান ভবনের দিকে এগুতে থাকলাম।
বৃহস্পতিবার, ২৩ এপ্রিল, ২০০৯
কাতার ভ্রমণ (পর্ব-১)
তবুও ভিসা নিয়ে অনিশ্চয়তা থেকেই গেলো। সম্মেলনের দিন ঘনিয়ে আসছে, কিন্তু আমার ভিসা আসার নাম নেই। এদিকে ই-টিকেটও করে ফেলেছি। মানসম্মান যায় যায় অবস্থা! জীবনের প্রথম অন্যদেশে যাওয়া হবে। অথচ অনিশ্চয়তার কারণে ব্লগে কারো সাথে শেয়ারও করতে পারছিনা। চরম আতঙ্ক জনক পরিস্থিতি!
ফ্লাইট ১৫ তারিখ সকালে। এদিকে ভাতিজা অনেক আগেই ভিসা পেয়ে গেছে। কিন্তু আমারটা কেন জানি আয়োজকরা পাঠাতে পারছেনা। ইমেইলে যোগাযোগ হচ্ছে। আমি আমারব্লগের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে যোগ দিবো। তাই ১৩ তারিখেই ঢাকায় চলে গেলাম। ইমেইলে জানানো হলো ১৩ তারিখের মধ্যে ভিসা পাঠাতে পারবে বলে তারা আশা করছে। কিন্তু ১৪ তারিখ দুপুরের মধ্যেও পাঠাতে পারলো না। অপেক্ষার প্রহর গুনছি। বিকাল ৩টা নাগাদ মেইল পেলাম যে ভিসা হয়ে গেছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই পেয়ে যাবো।
আমিও খুশি মনে আমারব্লগের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে চলে গেলাম। ভাবছিলাম অনুষ্ঠানের কোন এক ফাঁকে ব্লগারদের জানাবো পরেরদিন সকালে আমার কাতার যাওয়ার খবরটি। অভ্যাসবশত ফাঁকে ফাঁকে মোবাইলে মেইল চেক করছিলাম। ৬টার দিকে দেখি আরেকটা মেইল। আমাকে জানানো হলো, ভিসা তারা এইমুহুর্তে পাঠাতে পারছেনা। আশা করছে পরেরদিন পাঠাতে পারবে। আমি যেন ফ্লাইট পিছিয়ে দিই। মাথাটাই পুরা আউলা হয়ে গেলো। কারণ ফ্লাইট পিছিয়ে দেয়ার সময়টাও পেরিয়ে এসেছি। কী করবো বুঝতেছিলাম না। ব্লগের অনুষ্ঠান থেকে বিদায় নিয়ে আবার ভাইয়ের বাসায় ফেরত আসলাম। এদিকে যার মাধ্যমে ই-টিকেট করেছিলাম, সে জানালো পরের দিন যেতে না পারলে নাকি যাওয়ার টিকিটটা বাতিল হয়ে যাবে। নতুন টিকিট করতে আরো ২৫ হাজার টাকা লাগবে। আমারতো পুরা মাথায় হাত অবস্থা!
ই-মেইল করলাম আয়োজকদের। আমাকে একটি রিকোয়েস্ট লেটার যেন পাঠানো হয়, তাহলে অনএরাইভাল ভিসা নিতে পারি দোহা এয়ারপোর্ট থেকে। কিন্তু কোন উত্তর নাই।
মন খারাপ করে ঘুমাতে গেলাম। নিশ্চিত যে পরের দিন আমি যেতে পারছিনা। ভোররাতে ভাতিজাকে এয়ারপোর্টে দিয়ে আসার জন্য জেগে মেইল চেক করে দেখি, একটা রিকোয়েস্ট লেটার পাঠিয়েছে ওরা। তাড়াহুড়ো করে রেডি হয়ে আমিও গেলাম এয়ারপোর্ট। ইমিগ্রেশনে ঝামেলা করলো। ভিসা ছাড়া তারা মনে হয় কাউকে যেতে দেয় নাই কখনো! ইমিগ্রেশনের উর্ধ্বতন এক নারী অফিসারকে বুঝিয়ে বলার পর ইমিগ্রেশন ছাড়পত্র দিলো। কিন্তু কাতার এয়ার লাইনসের চেকিং এর সময় তারা বললো, দোহায় অনএরাইভাল ভিসা বাংলাদেশীদের জন্য প্রযোজ্য নয়। সুতরাং আমাকে ফিরে আসতে হবে। কী আর করা! ভাতিজা, সেই সাথে এয়ারপোর্টে পরিচিত হওয়া আরো দুই জন অংশগ্রহণকারী। তারা চলে গেলো। আমি ফিরে আসলাম বাসায়।
শনিবার, ৪ এপ্রিল, ২০০৯
ওয়ারিদের ওয়েবসাইট থেকে যেকোন ওয়ারিদ নাম্বারে ফ্রি এসএমএস পাঠান… যত্তো খুশি…
অন্য সবাইকেও সিস্টেমটা জানানো দরকার। কী কী করতে হবে বলছি।
প্রথম ওয়ারিদের সাইটে (http://www.waridtel.com.bd) গিয়ে সাইন আপ করতে হবে আপনার নাম্বার দিয়ে। সাথে সাথে আপনার নাম্বারে একটি একটিভেশন কোড আসবে। কোডটি সাইটে দিয়ে সাইনআপ সম্পূর্ণ করতে হবে। এরপর আপনার মোবাইল নাম্বার হবে লগইন নেম। ইচ্ছা করলে পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করে নেয়া যাবে।
ওয়ারিদের সাইটে লগইন করলে আপনি ইচ্ছেমত যেকোন ওয়ারিদ নাম্বারে যত খুশি এসএমএস পাঠানো পারেন। অ্যাড্রেসবুক তৈরি করতে পারেন। অল্প কয়েকটি ক্লিকে অ্যাড্রেসবুকে থাকা সব নাম্বারে একসাথে এসএমএস পাঠাতে পারেন।
এটা গেলো একটা সুবিধা। এছাড়াও রয়েছে অনেক সুবিধা।
এছাড়া লগইন করে জানতে পারবেন আপনার রেজি: সম্পর্কি তথ্যাবলী, কল ডিটেইলস, অ্যাকাউন্ড হিস্টোরী, রিচার্জ হিস্টোরী।
কোথায় কল করেছেন, প্রতি কলে কত খরচ হয়েছে -সব জানতে পারবেন। (আইটেমাইজ্ড বিল দিতে গ্রামীন ১০০ টাকা চার্জ নেয়। অথচ ওয়ারিদে সাইট থেকেই জানা যায়)
এফএনএফ নাম্বার সেটআপ করতে পারবেন। এবং সার্ভিসগুলো সম্পূর্ণ ফ্রি।
ওয়ারিদের বিভিন্ন সার্ভিসের স্ট্যাটাস জানতে ও সার্ভিস অ্যাকটিভও করতে পারবেন।
তাই ওয়ারিদ ব্যাবহারকারীদের মধ্যে যাদের ইন্টারনেট কানেকশন আছে, তারা দেরি না করে আজই লগইন করুণ ওয়ারিদের সাইট (http://www.waridtel.com.bd)।
উপভোগ করুণ যে কোন ওয়ারিদ নাম্বারে ফ্রি এসএমএস।
বৃহস্পতিবার, ১২ মার্চ, ২০০৯
মায়াবী ঘাতক
একদিন এক প্রজাপতি ছুঁয়েছিলো আমায়,
তার শ্যামল চোখে অনাগত স্বপ্নের হাতছানি;
বৃত্তের ভেতর বৃত্তের আল্পনার ছোপ ছোপ দাগ
সাজিয়ে আমারে ডেকেছিলো ভীষণ মায়ায়।
আমি সেই প্রজাপতি ছুঁয়ে বর্ণীল আলোয়
ঘুরে বেড়িয়েছি শহরের ভেতরের শহর।
পাঁচ আঙুলের সাথে পাঁচ আঙুলের দিনমান বন্ধন,
স্নায়ুগ্রন্থী বেয়ে মাতাল করতো অলৌকিক শারাব।
শ্যামল প্রজাপতি, শেষকাষ্ঠ জ্বালানো মায়াবী ঘাতক;
তরল আগুন লুকোতেই কি অভিনয়ে হেসেছিলে লাজুক?
১২ আগস্ট ২০০৮
সাত আগস্ট দু’হাজার ছয়
কখনো এমন হয়, খুব ছোট্ট ঘটনার মধ্য দিয়ে
সর্বনাশের শুরু। ঘটনার শেষ চক্রের ঘনঘটায়
নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসার উপক্রম হলেও টের
পাওয়া যায় না, সর্বনাশের ষোলকলা পূর্ণ হয়েছে।
কখনো এমন হয়, সমাপ্তির পর বোঝা যায় শুরুর
ছোট্ট দৃশ্যের তাৎপর্য; সবশেষে বিদায় নেবার পর অর্থহীন
হাপিত্যেশে যায় দিন, মুখিয়ে ওঠা সরব স্মৃতিরা খুঁজে পায়
বেদনার জলপ্রপাতের উৎসমুখ - ভুলত্রুটির কার্যকারণ।
তার আগ পর্যন্ত ভুল বিশ্বাসে ভুলে থাকে মন
শুরুর ক্ষণ থেকে শেষ মুহুর্তটি পর্যন্ত।
যেমন শুরু হয়েছিলো সাত আগস্ট দু’হাজার ছয় সন্ধ্যা;
তারপর একদিন উচ্চারিত হয় – ‘সমাপ্ত হলো’।
- - -
মাইজদী, নোয়াখালী
৭ আগস্ট, ২০০৮
ফিরে এসো
নেমে এসো মেয়ে পর্বত শিখর থেকে,
মানুষের কাছাকাছি।
ঐ উচুতে বসবাসে কী আনন্দ?
কী আরাম হিম শীতল পর্বতের চূড়ায়?
ওখানে কি বসতি আছে? শুভ্র মেষ পাল?
উঁচুতে উঠতে উঠতে ছায়াপথ ছাড়িয়ে যাও,
মিটিমিটি তারাদের ছুঁয়ে যাও
ইশারায় জ্বালিয়ে দাও স্ফটিক স্বচ্ছ ঝাড়বাতি;
আর আমরা ডুবে থাকি মিশমিশে কালো অন্ধকারে!
বাঁকানো উপত্যকা বেয়ে নেমে এসো সমতলে
ভালোবাসার জন্য, এসো,
খুঁজে নাও ভবিষ্যত সুখী গৃহস্বামী।
এখানে দ্যাখো ধান আছে, গম আছে, আছে ডালের প্রাচুর্য।
প্রতিদিনের তাজা তরকারী আছে, পুকুরে মাছ আছে;
এখানে বাতাস আরামদায়ক, আছে পরিমানমত সতেজ বৃষ্টি,
ঋতুর পরিবর্তনে আকাশ রঙ বদলায় - চারদিক কেমন কোমল সুন্দর!
ফিরে এসো মেয়ে, মানুষের কাছাকাছি;
এবার সরিয়ে নাও সপ্ত নেকাব,
জেনো, প্রতীক্ষায় আছে সেই হারানো মেষপালক।
৪ আগস্ট, ২০০৮
প্রজাপতি ছুঁয়ে দিলে
শুক্রবার, ৬ ফেব্রুয়ারী, ২০০৯
রাখাইন নৃত্য
সকালে একটা শিশু একাডেমীর একটা অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ ছিলো। আন্ত:জেলা সাংস্কৃতিক বিনিময় উপলক্ষ্যে আয়োজন করা হয়েছিলো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের। কক্সবাজার শিশু একাডেমী'র একটি দল তাদের রাখাইন নৃত্য দিয়ে পরিবেশনা শুরু করে। আমি কয়েকটা ছবি তুলে চলে আসি। একমিনিটের একটা ক্লিপ ও রেকর্ড করি।
ইউটিউবে কয়েকমাস আগে একটা অ্যাকাউন্ট তৈরি করেছিলাম। কয়েকটা ক্লিপ ও আপলোড করেছিলাম। কিন্তু তার ইউজার নেম ভুলে যাই বারে বারে। এই অ্যাকাউন্টটা জিমেইল আইডি দিয়েই তৈরি করা। তাই জিমেইল থেকে ম্যানেজমেন্টে সুবিধা। পরীক্ষামূলকভাবে ভিডিওটা আপলোড করলাম।
ভিডিও কোয়ালিটি ভালো না। কোয়ালিটি ভালো রাখতে গেলে ফাইল সাইজ বেড়ে যায়। আপলোডে অসুবিধা হয়।
শুক্রবার, ৩০ জানুয়ারী, ২০০৯
ভালোবাসা কৃষিকাজের মত সোজা নয়
আমি জানতাম না, ভালোবাসা কৃষিকাজের মত সোজা নয়;
ভালোবাসা এক আগ্রাসী যুদ্ধ -
তাতে যুদ্ধনীতি আছে, কূটনীতি আছে।
অভিজ্ঞ সমরবিদের মত পরিকল্পনা সাজাতে হয়
গবেষণা করে বের করতে হয় প্রতিপক্ষের দূর্বলতা,
সামান্য অন্যমনস্কতায় একটু এদিক ওদিক হলেই
দূর্ভেদ্য দূর্গ উড়ে যেতে পারে কামানের গোলায়।
ভালোবাসা টেকাতে হলে আবিস্কার করতে হয় নিত্য নতুন মারণাস্ত্র,
প্রতিপক্ষের চেয়ে কম বিধ্বংসী হলে ময়দানে নামার
আগেই পরাজিত হতে হয় স্নায়ু যুদ্ধে।
অথচ আমি কি না ভেবেছিলাম-
শ্রম ঘাম দিয়ে বীজ বুনলে,
সময় সময় আগাছা নিড়িয়ে দিলে,
মাটির রঙ বুঝে হাট থেকে সার কিনে দিলে অথবা
আরো ভালো হয় জৈব সার দিলে শস্যক্ষেতে
এবং কয়েকবার করে সেচ দিলেই ফসল ফলবে সোনারঙা!
আমি শালার আজন্ম চাষা,
আজও সৈনিক হলাম না!
১৬ জুলাই, ২০০৮
শুক্রবার, ২৩ জানুয়ারী, ২০০৯
আমাদের নারীরা সুখে থাকুক
তাহাদের পঞ্চদশ তলার ফ্ল্যাটে গুচ্ছ গুচ্ছ গোলাপঝাড় বেড়ে উঠুক।
তাহাদের বিছানায় মাখনের মত আদরের বৃষ্টি ঝরুক
তাহাদের রমণীয় মুখের দিকে টিভি ক্যামেরা হা করে থাকুক প্রতিদিন।
তাহাদের রন্ধন প্রণালী সুগন্ধ ছড়াক চ্যানেলে চ্যানেলে।
স্টারপ্লাসের মেগা সিরিয়ালের মত তীব্র আলোকিত হোক অন্দরমহল,
পরিপাটি মেকআপ নিয়েই প্রতিদিন তাহাদের ঘুম ভাঙুক,
ইভিনিং ইন প্যারিস সৌরভ ছড়াক তাহাদের দেহে মনে।
তাহাদের ঈদের বাজার হোক কলকাতা
অথবা সিঙ্গাপুর, নিদেনপক্ষে নব্য ফিউশন পার্ক।
তাহাদের অন্তর্বাস হোক স্পোর্টিং,
স্যানিটারী টাওয়েল হোক মেড ইন ইন্ডিয়া, নিশ্ছিদ্র সুরক্ষিত;
তাহাদের নখে, আঙুলে, কপালে, ঠোঁটে, স্তনে, জঙ্ঘায় সুখের স্ফীতি ঘটুক
তাহাদের কোমল ত্বক অলিভ অয়েল সুরক্ষায় থাকুক।
তাহাদের এটিএম বুথে ব্যালান্স কখনোই না কমুক,
তাহাদের ফিক্সড ডিপোজিটের সংখ্যা বাড়তেই থাকুক।
আমাদের নারীরা সুখে থাকুক
তাহাদের মনে নিশিদিন সুখের বৃষ্টি ঝরে ঝরে পড়ুক।
- - -
মাইজদী ,নোয়াখালী
২৩ জানুয়ারি ২০০৯
বুধবার, ২১ জানুয়ারী, ২০০৯
রহিমার রহস্যময় বিয়ে (আমার লেখা জীবনের প্রথম গল্প!)
মিজান সাহেব আমাদের পাশের বাড়ীতে থাকেন। বয়স প্রায় ৮০ ছুই ছুই। সন্ধ্যার পর আমাদের আড্ডা হয় তার দোতলা বাড়ীর ছাদে। মিজান সাহেবের ছাদ আবার একটু অন্ধকার। গাছের আড়ালের কারণে ল্যাম্পপোস্টের আলো পুরোপুরি পৌছায় না। একেবারেই ভুতুড়ে পরিবেশ। আজ হঠাত করে আড্ডায় মধ্যে ভূতুড়ে অভিজ্ঞতার বয়ান শুরু হলো। এই বিষয়ে মিজান সাহেবের দেখলাম ব্যাপক আগ্রহ। তার নাকি জীবনে অনেক অদ্ভূতুড়ে অভিজ্ঞতা আছে। তার একটি আজ বলবেন। সবাই আগ্রহ নিয়ে কান খাড়া করে আছি। পরিবেশটাই ভুতের গল্প শোনার জন্য মানানসই।
মিজান সাহেব আবার বলতে শুরু করলেন। আমার দিকে ফিরে বললেন, বুঝলেন নাফিদ সাহেব, ঘটনাটা আজও একটা রহস্য হয়ে আছে। যা বলছিলাম, রহিমার বয়স তখন ১৪। গ্রামে আমাদের প্রতিবেশী। তখনকার দিনে এই বয়সের আগেই মেয়েদের বিয়ে হয়ে যেতো। রহিমার বিয়ে একটু দেরিতেই হয়েছিলো। মা বাবার আদরের ছিলো বলে দেরিতে বিয়ে দিয়েছিলো।
রহিমার বিয়ে কার সাথে হচ্ছিলো, আমরা পরিস্কার জানতাম না। রহিমার বাবা ফকির দরবেশ টাইপ মানুষ ছিলেন। খেয়ালি প্রকৃতির। হঠাত করে তার এক মুরিদের পাল্লায় পড়ে মেয়ের বিয়ে ঠিক করে ফেলেছেন। বরের সম্পর্কে আগাম কিছুই আমাদের জানা ছিলোনা। রহিমার বাবাকে ভয় মিশ্রিত ভক্তি শ্রদ্ধা করতাম বলে কিছু জিজ্ঞেসও করা হয়নি কারো। ফকির দরবেশ মানুষ। কার উপর গোস্বা হয় কে জানে!
বিয়ের সময় মাগরিবের পরে ঠিক হয়েছিলো। পাত্র পক্ষ মাগরিবের পরে অন্ধকার নামতেই হাজির হলো। বরের সাথে মাত্র দুইজন মানুষ। একজন রহিমার বাবার মুরিদ সেই মানুষটি, পাত্রের মামা। আরেকজন পাত্রের বাবা। এত কম বরযাত্রী আসাতে আমরা সবাই অবাক হলেও কিছু বললাম না। খেয়ে দেয়া হুজুর কলেমা পড়ালেন। পাত্রের চেহারা দেখলাম তখন। চেহারাটা কেন জানি সুবিধার লাগলো না। চোখগুলো ঘোলাটো ঘোলাটে। প্রথম দর্শনেই আমাদের কারো পছন্দ হলো না। কিন্তু কিছুই করার নাই। আমরা খেয়েদেয়ে বাড়ীতে চলে এলাম। পরের দিন ভোরে হইচই শুনে ঘুম ভাঙলো। রহিমাদের বাড়ীতে প্রচন্ড গোলমালের আওয়াজ পেলাম। এক দৌড়ে গিয়ে হাজির হলাম।
দেখলাম রহিমা অজ্ঞান পড়ে আছে। সবাই তার মুখে পানির ছিটকা দিচ্ছে। জ্ঞান ফেরার পর সবার কথায় ঘটনা পরিস্কার হলো আমাদের কাছে।
জানলাম, বরপক্ষের দুইজন বরকে রেখে রাতেই চলে যায়। রহিমার বাসর ঘরে যখন বর প্রবেশ করে, তখন রাত হয়েছে অনেক। গ্রামের বাড়ী। চারদিক ততক্ষণে নিশ্চুপ। শুধু ঝিঁ ঝিঁ পোকার ডাক। হারিকেনের মৃদু আলো জ্বলছে। বরের মুখ একবার মাত্র দেখেছিলো রহিমা। ঘোলাটে চোখ দেখেই ভয়ের একটা শিরশিরে অনুভূতি তাকে ঘিরে ধরে। আরো ভালো করে দেখার আগেই বর হারিকেনের আলো এক ঝটকায় নিভিয়ে দিলো। তারপর নি:শব্দে রহিমার পাশে এসে বসলো। রহিমার কেন যেন অস্বস্তি লেগে উঠলো। তবুও কিছু করার নেই। এই ছেলেই এখন তার সবকিছূর মালিক। সহ্য তো করতেই হবে। কিন্তু ছেলেটি যখন তাকে জড়িয়ে ধরলো, হাতগুলো কেমন যেন লোমশ লোমশ লাগলো। গা সিড়সিড় করে উঠলো রহিমার। অস্বস্তিকর অনুভূতি নিয়েই স্বামীসঙ্গ হলো। তার পুরো শরীর কেমন যেন অসাড় হয়ে উঠলো। তান্ডব শেষে ক্লান্ত রহিমা মরার মত ঘুমালো। ভোরে যখন ঘুম ভাঙলো, পাশ ফিরতেই দেখলো তার বিছানা খালি।
বাইরে তখন গন্ডগোলের শব্দ। রহিমার বাবা দরজায় ধাক্কা দিচ্ছেন। দরজা খোলার পরপরই তিনি মেয়েকে জড়িয়ে ধরে ডুকরে কেদে উঠলেন। তারপরের ঘটনা শুনেই রহিমাও অজ্ঞান।
ঘটনা হলো, যার সাথে রহিমার বিয়ে ঠিক হয়েছিলো, তারা নৌকায় করে আগের দিন দুপুরে রওনা দিয়েছিলো। কিন্তু আসার পথে বিকেলে নৌকাডুবিতে পাত্র তার দুই সাথী সহ মারা যায়। সকাল বেলা তাদের লাশ ভেসে উঠে নদীতে। গ্রামের মনু মাঝি লাশগুলো পাড়ে নিয়ে আসে।
- এই হলো ঘটনা। বুঝলেন নাফিদ সাহেব। এইটা এখনো এক রহস্য আমার কাছে। পাত্র যদি আগেই মারা যায়, রহিমার বাসর হলো তাহলে কার সাথে! আরো অবাক করা ঘটনা হলো, রহিমা পরবর্তীতে গর্ভবতী হয়। একটি সন্তানও হয়। ছেলে সন্তান। চেহারা অবিকল বাবার মতই। চোখগুলো ঘোলাটে ঘোলাটে।
বুধবার, ৭ জানুয়ারী, ২০০৯
স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র Peace
আমার ভাগ্নে ইভান। এআইইউবিতে পড়ছে। পোলাপান বড় হলে যা হয়, কখন কি করে সব খবর রাখা হয় না। মাঝে মাঝে শুনি, ওরা বন্ধুরা মিলে পরীক্ষামূলক ফিল্ম বানায়। কিন্তু দেখা হয়ে ওঠেনি।
আজ মেসেঞ্জারে নক করে বললো, ওর একটা স্বল্প দৈর্ঘ্য ফিল্ম ইউটিউবে আপলোড করেছে। এটা নাকি গত বছর ঢাকা আন্ত:বিশ্ববিদ্যালয় স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র উতসবেপ্রদর্শিত হয়েছিলো। লিঙ্ক পেয়ে অনেক সময় নিয়ে ডাউনলোড করে দেখলাম। আপনাদের জন্য লিঙ্কটা দিচ্ছি।
ফিল্মটার নাম Peace । ইভান আর তার বন্ধু রাব্বী, দুজনে মিলে বানিয়েছে। চিত্রনাট্য, অভিনয়, ক্যামেরা, এডিটিং- সব কিছুই ওদের করা।
মঙ্গলবার, ৬ জানুয়ারী, ২০০৯
বিজয়ে তৈরি করা মাইক্রোসফট অফিস ফাইল ইউনিকোডে রুপান্তর করুণ “নিকস কনভার্টার” দিয়ে
আনন্দের কথা হলো বাংলাদেশ ইলেকশন কমিশন সেই কাজটি করেছে। ইলেকশন কমিশনের ওয়েবসাইট থেকে নিকস কনভার্টার নামের বিজয় থেকে ইউনিকোড রুপান্তরক প্রোগ্রামটি ডাউনলোড করা যাবে। ব্যবহার খুবই সহজ। যে কোন অফিস ওয়ার্ড, এক্সেল, পাওয়ারপয়েন্ট ফাইলকে ফরম্যাটিং ঠিক রেখে বাংলা ইউনিকোডে রুপান্তরিত করে প্রোগ্রামটি। একক ফাইলকে কনভার্ট করা যায়। আবার ব্যাচ ফাইলকেও একসাথে কনভার্ট করা যায়।
খুবই কাজের এই সফটওয়্যারটি ডাউনলোড করতে পারবেন এই লিঙ্ক থেকে। ইনস্টলারটির সাইজ ১৪ মেগাবাইট।
উল্লেখ্য, নিকস কনভার্টারটি চালাতে .NET framework ইনস্টল করা থাকতে হবে। যাদের .NET framework ইনস্টল করা নেই, তারা .NET framework সহ নিকস কনভার্টার ইনস্টলারটি (৩৯ মেগাবাইট সাইজ) ডাউনলোড করতে পারেন। সফটওয়্যারটি ইনস্টল করলে ব্যবহার নির্দেশিকা পাবেন। সাথে চমৎকার কয়েকটি ইউনিকোড বাংলা ফন্ট ও পাবেন। শুধু ফন্ট ডাউনলোড করতে পারবেন এই লিঙ্ক থেকে।