সূর্য দিনের যাত্রা শুরুর অনেক পরে
আমার ঘুম ভাঙে।
বিরতিহীন ব্যস্ত দিনের শুরু
বিড়ালের মত রাজকীয় আড়মোড়া ভেঙে;
আলসেমি কাটিয়ে পুকুরের জলে সাঁতার,
নাশতার টেবিলে টুকটাক সাংসারিক আলাপ
শেষে মাসকাবারি কামলা দিতে দিই ছুট।
কাজের ফাঁকে চায়ের কাপে চুমুক,
মনিটরে সতর্ক চোখ, কিবোর্ডে আঙুলের নাচন,
ফাঁকে ফাঁকে মুঠোফোনে ফরমায়েশি আলাপচারিতা,
ন'টা-পাঁচটা'র বাধ্যবাধ্যকতা শেষে
ঢু মেরে যাওয়া প্রতিদিনকার আড্ডায়;
তামাকের ধোঁয়ায় উড়ে যায় বিচ্ছিন্ন আবেগ।
তারপর একই পথে বাড়ী ফেরা, মায়ের খোঁজখবর;
এরপর আন্তর্জালের ঘরে হাসি কান্না সুখ দূঃখের বিনিময়
শেষে ক্লান্ত দু'চোখ যখন ধৈর্য্যের শেষ সীমায়,
ঢুলু ঢুলু চোখে মশারি খাটিয়েই গা এলিয়ে দেয়া বিছানার আদরে।
দিনের ব্যস্ততার চক্রে এক সেকেন্ডও অবসর খুঁজি না,
পাছে মুহুর্তের অবসরের অসতর্কতায় তুমি
ঢুকে পড়ো মনের ঘরে!
নোয়াখালী
২৭ মার্চ, ২০০৮
সে আর আমি
সে আর আমি- একসাথে চলি
সে আর আমি- একসাথে হাসি
সে আর আমি- একসাথে কাঁদি
সে আর আমি- একসাথে জ্বলি।
সে আর আমি- পর্দা সরাই
সে আর আমি- ব্যবধান কমাই
সে আর আমি- খুব কাছাকাছি
সে আর আমি- দুই ধনুক ব্যবধানে দাঁড়াই
সে আর আমি- তবু অচেনা!
১৬ মার্চ ২০০৮
সে আর আমি- একসাথে হাসি
সে আর আমি- একসাথে কাঁদি
সে আর আমি- একসাথে জ্বলি।
সে আর আমি- পর্দা সরাই
সে আর আমি- ব্যবধান কমাই
সে আর আমি- খুব কাছাকাছি
সে আর আমি- দুই ধনুক ব্যবধানে দাঁড়াই
সে আর আমি- তবু অচেনা!
১৬ মার্চ ২০০৮
কে হে তুমি বালিকা
রাস্তায় দাঁড়িয়ে আনমনে
তাকাও এদিক ওদিক।
যেন অপেক্ষমান তীব্র প্রতীক্ষায়,
কোন যুবকের বাহুডোরে
সমর্পণের আকাঙ্খায় ব্যাকুল;
রোদের তীব্রতায় ভ্রুকুটি হেনে
দৃঢ়তায় দাঁড়িয়ে আছো।
বখাটের অযাচিত আক্রমনের নেই ভয়,
রাস্তায় হাজার জনতার ভীড়েও অসচেতন,
খেয়াল নেই কে এসে আড়চোখে চেয়ে যায়।
অস্থিরতা কুরে কুরে খায় তোমাকে
এক মিনিট দু’মিনিট করে ঘন্টাধ্বনি বাজলো প্রায়।
যুবক কি আজ আটকা পড়েছে
পথের অনিশ্চয়তায়?
যুবক কি ভুলেছে প্রতীক্ষার মাসগুলো শেষে মিলনের দিনক্ষণ?
ভীষণ প্রতীক্ষায় আনমনে দাঁড়িয়ে আছো;
কুমারী সলাজ চোখের গভীরে
অচেনা যুবকের প্রতি প্রগাঢ় মায়ার ছায়া।
জানি ভুল করে ধরা পড়ে গেলে চোরা চাহনি
কুঁকড়ে উঠবে ভীষণ।
লজ্জাবতীর চেয়েও দ্রুততায় গুটিয়ে যাবে,
ঢেকে ঢুকে রাখবে কোমল সৌন্দর্যের আলোকিত বিচ্ছুরণ।
তোমার চোখের ছায়ায় টের পাই,
আকাঙ্খিত সেই যুবকের প্রতি ইস্পাত কঠিন বিশ্বাস;
যুবক আসবেই নিশ্চিত জেনে দাঁড়িয়ে থাকো স্থির।
তবু নির্লজ্জ মন জিজ্ঞেস করে বারে বারে--
কে হে তুমি বালিকা?
ছুঁয়ে যাও আলতো করে!
নোয়াখালী
১৪ মার্চ ২০০৮
তাকাও এদিক ওদিক।
যেন অপেক্ষমান তীব্র প্রতীক্ষায়,
কোন যুবকের বাহুডোরে
সমর্পণের আকাঙ্খায় ব্যাকুল;
রোদের তীব্রতায় ভ্রুকুটি হেনে
দৃঢ়তায় দাঁড়িয়ে আছো।
বখাটের অযাচিত আক্রমনের নেই ভয়,
রাস্তায় হাজার জনতার ভীড়েও অসচেতন,
খেয়াল নেই কে এসে আড়চোখে চেয়ে যায়।
অস্থিরতা কুরে কুরে খায় তোমাকে
এক মিনিট দু’মিনিট করে ঘন্টাধ্বনি বাজলো প্রায়।
যুবক কি আজ আটকা পড়েছে
পথের অনিশ্চয়তায়?
যুবক কি ভুলেছে প্রতীক্ষার মাসগুলো শেষে মিলনের দিনক্ষণ?
ভীষণ প্রতীক্ষায় আনমনে দাঁড়িয়ে আছো;
কুমারী সলাজ চোখের গভীরে
অচেনা যুবকের প্রতি প্রগাঢ় মায়ার ছায়া।
জানি ভুল করে ধরা পড়ে গেলে চোরা চাহনি
কুঁকড়ে উঠবে ভীষণ।
লজ্জাবতীর চেয়েও দ্রুততায় গুটিয়ে যাবে,
ঢেকে ঢুকে রাখবে কোমল সৌন্দর্যের আলোকিত বিচ্ছুরণ।
তোমার চোখের ছায়ায় টের পাই,
আকাঙ্খিত সেই যুবকের প্রতি ইস্পাত কঠিন বিশ্বাস;
যুবক আসবেই নিশ্চিত জেনে দাঁড়িয়ে থাকো স্থির।
তবু নির্লজ্জ মন জিজ্ঞেস করে বারে বারে--
কে হে তুমি বালিকা?
ছুঁয়ে যাও আলতো করে!
নোয়াখালী
১৪ মার্চ ২০০৮
নাকফুল

গত ঈদে সালোয়ার কামিজ কিনে দিতে চাইলাম,
নিলে না;
ব্রেসলেট দিতে চাইলাম
তাও না।
শেষমেষ নিলে একজোড়া সাদা পাথরের কানের দুল,
নকল হীরের দ্যূতি ছড়ানো;
খুব বেশি দামী কিছু নয়, একদিনের রোজগার।
ইচ্ছে ছিলো খুব শীঘ্রই কিনে দেবো
আশ্চর্য সুন্দর একটি নাকফুল
তোমার পছন্দের,
হোক না যতই দামী,
হোক না কয়েক মাসের বেতন সমান,
হোক না দূর্লভ;
এ দোকান সে দোকান ঘুরে
সময় নিয়ে ঠিকই খুঁজে বের করতাম।
ইচ্ছে ছিলো খুব শীঘ্রই তোমাকে কিনে দেবো
আশ্চর্য সুন্দর একটি নাকফুল।
তোমাকে নাকফুল কিনে দেয়া আর হলোনা...
নোয়াখালী
১২ মার্চ ২০০৮
নিঃসঙ্গতায় ছুঁই
করুণাময় নই
দয়াময় নই
নই প্রেমিক
নই শাস্তিদাতা।
সর্বজ্ঞাতা নই
সর্বশ্রোতা নই
নই রক্ষাকারী
নই শান্তিদাতা।
তোমায় রুপে ছুঁই না
অরুপে ছুঁই না
সাকারে ছুঁই না
নিরাকারে ছুঁই না
তোমায় কেবল নিঃসঙ্গতায় ছুঁই।
হে পরম নিঃসঙ্গ,
তোমায় কেবল নিঃসঙ্গতায় ছুঁই...
৩ মার্চ ২০০৮
দয়াময় নই
নই প্রেমিক
নই শাস্তিদাতা।
সর্বজ্ঞাতা নই
সর্বশ্রোতা নই
নই রক্ষাকারী
নই শান্তিদাতা।
তোমায় রুপে ছুঁই না
অরুপে ছুঁই না
সাকারে ছুঁই না
নিরাকারে ছুঁই না
তোমায় কেবল নিঃসঙ্গতায় ছুঁই।
হে পরম নিঃসঙ্গ,
তোমায় কেবল নিঃসঙ্গতায় ছুঁই...
৩ মার্চ ২০০৮
নিভৃত আকাশে
প্রভাকরের বিকীর্ণ আলোয় উজ্জ্বল পৃথিবী,
নিস্তরঙ্গ পুকুরের ফ্রেমে আবদ্ধ নীলাকাশ,
বাসন্তী হাওয়ায় উচ্ছল গাছগাছালি,
- এই সব নৈসর্গিক স্বাভাবিকতায়
তোমার আগমন হঠাৎ করেই।
সাইমুম ঝড়ের মত তুমি এলে- দূর্নিবার – অদম্য;
সাধ্য কি আমার তোমাকে রুখার!
তুমি এলে এবং আমার সমস্ত কিছু পাল্টে গ্যালো এক লহমায়।
আগের মত চলতে পারি না,
আগের মত ভাবতে পারি না।
আমার তন্দ্রাচ্ছন্ন চেতনা তোমার স্পর্শে প্রাণ ফিরে পায়;
আমার কাব্যের আকাশে তুমি যেন অবাক সূর্যোদয়!
আমার বোধের আলো আঁধারীতে এতদিন
মাতৃগর্ভে ঘুমন্ত শিশুর মত ছিলো যে কবিতারা,
তোমার সযত্ন উৎসাহে তারা ভূমিষ্ট হয় আমার লেখনীতে।
আমার কাব্য পূর্ণতা পায় তোমার প্রেরণায়।
এত যে ওলট-পালট, এত যে পূনর্নিমান আমার জীবনে যে তোমার জন্য,
সে তুমি জানোই না – তুমিই এর কারণ।
তবুও তুমি আছো ধ্রুবতারার মত বিরাজমান
আমার নিভৃত আকাশে।।
নোয়াখালী
২৬.২.১৯৯৭
-------------------------------------------------
* ড্রয়ার ঘাটতে গিয়ে আজ অনেক বছর আগের দিন তারিখসহ কিছু লেখা পেলাম। এই লেখাটি তারই একটি। তখন এইচএসসি ১ম বর্ষে পড়তাম।
নিস্তরঙ্গ পুকুরের ফ্রেমে আবদ্ধ নীলাকাশ,
বাসন্তী হাওয়ায় উচ্ছল গাছগাছালি,
- এই সব নৈসর্গিক স্বাভাবিকতায়
তোমার আগমন হঠাৎ করেই।
সাইমুম ঝড়ের মত তুমি এলে- দূর্নিবার – অদম্য;
সাধ্য কি আমার তোমাকে রুখার!
তুমি এলে এবং আমার সমস্ত কিছু পাল্টে গ্যালো এক লহমায়।
আগের মত চলতে পারি না,
আগের মত ভাবতে পারি না।
আমার তন্দ্রাচ্ছন্ন চেতনা তোমার স্পর্শে প্রাণ ফিরে পায়;
আমার কাব্যের আকাশে তুমি যেন অবাক সূর্যোদয়!
আমার বোধের আলো আঁধারীতে এতদিন
মাতৃগর্ভে ঘুমন্ত শিশুর মত ছিলো যে কবিতারা,
তোমার সযত্ন উৎসাহে তারা ভূমিষ্ট হয় আমার লেখনীতে।
আমার কাব্য পূর্ণতা পায় তোমার প্রেরণায়।
এত যে ওলট-পালট, এত যে পূনর্নিমান আমার জীবনে যে তোমার জন্য,
সে তুমি জানোই না – তুমিই এর কারণ।
তবুও তুমি আছো ধ্রুবতারার মত বিরাজমান
আমার নিভৃত আকাশে।।
নোয়াখালী
২৬.২.১৯৯৭
-------------------------------------------------
* ড্রয়ার ঘাটতে গিয়ে আজ অনেক বছর আগের দিন তারিখসহ কিছু লেখা পেলাম। এই লেখাটি তারই একটি। তখন এইচএসসি ১ম বর্ষে পড়তাম।
জানালার পাশে

পর্দা উঠালেই সবুজ গাছের সারি,
নারিকেল সুপারি থোকা থোকা;
কচি লাউয়ের ডগায়
কুমড়োর ফুলে পতঙ্গের উড়াউড়ি।
চেনা অচেনা ঘাসফুলেদের সমারোহে
সতেজ হয়ে উঠে সদ্য ঘুম ভাঙ্গা নিস্তেজ চোখ।
পাশেই ছোট্ট পুকুরে মাছেদের ক্লান্তিহীন ছুটোছুটি,
কাক চক্ষু জলে লাল পদ্মের হাসি;
কখনো ত্রস্ত প্রজাপতি এসে ছুঁয়ে যায়
বর্ণীল আলোকোচ্ছটায়।
নরম রোদের আদরে ভুলে যাওয়া
শীতার্ত রাতের স্মৃতি।
এইসব যান্ত্রিক চাওয়া পাওয়া
এইসব ভোগের উচ্ছিষ্টের ভীড়ে
স্বপ্নহীন দু’চোখ যখন ক্লান্ত হয়,
জানালা খুলে দিই
পাখির চোখে স্বপ্ন আঁকি।
ভালো আছি, বেশ ভালো আছি...
নোয়াখালী
৭ মার্চ, ২০০৮
দৃষ্টি
শনিবার, ২২ মার্চ, ২০০৮
নদীগর্ভে বিলীন পুরনো শহর নোয়াখালী
নোয়াখালীতে কেউ বেড়াতে এলে অবাক হয় জেলা শহরের নাম শুনে। বাংলাদেশে নোয়াখালীই একমাত্র জেলা, যার জেলা শহরের নাম জেলার নামে নয়। নোয়াখালী’র জেলা শহরের নাম মাইজদী। কেন নোয়াখালী’র জেলা শহরের নাম মাইজদী হলো তা জানতে হলে পিছনের ইতিহাস জানতে হবে।
নোয়াখালী জেলার পত্তন হয় ১৮২১ সালে। বৃটিশ প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষ ১৮২২ সালে নোয়াখালীর জন্যে একটি জয়েন্ট ম্যাজিস্ট্রেটের পদ সৃষ্টি করে। একজন স্বতন্ত্র কালেকটর নিযুক্ত হয় ১৮৩০ সালে। জেলা হিসেবে নোয়াখালী পূর্ণ মর্যাদা লাভ করে ১৮৭৬ সালে। ঐ বছরেই নোয়াখালীতে একজন সেসন জজ ও সিভিল জজ নিয়োগ করা হয় এবং প্রথম পৌরসভা গঠিত হয়। সুধারাম মজুমদার নামে এক ব্যক্তির দানকৃত স্থানে শহরটি স্থাপিত হয়েছিল বলে প্রথম থেকেই এই শহর সুধারাম নামে পরিচিতি লাভ করে।
নোয়াখালী শহরের ইতিহাস ভাঙা গড়ার ইতিহাস। কথায় বলে,
“ভাঙ্গা-গড়া চোরাবালী
তার নাম নোয়াখালী”
চল্লিশের দশকে নোয়াখালী অনেক ছোট ছিলো। শহরটি আরো দক্ষিণে বিস্তীর্ণ অঞ্চল নিয়ে গড়ে উঠেছিলো। কালক্রমে নদী ভাঙনের ফলে উত্তরে সরে আসে। নদী ভাঙনের ফলে কালক্রমে নোয়াখালীর মূল শহরটি উত্তরাংশ অর্থাৎ সোনাপুর হতে কিছুটা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
নোয়াখালী শহর নদীগর্ভে বিলুপ্তির কাজটি ত্বরান্বিত করে নোয়াখালী খাল। সাগরের প্রবল জোয়ার এই খালটির মধ্যদিয়ে এসে জেলার তীরবর্তী এলাকায় প্রচন্ডভাবে আঘাত হানতো। নদীর ভাঙন যখন সর্বগ্রাসী মূর্তি ধারণ করে নোয়াখালী শহরকে গ্রাস করতে উদ্যত ঠিক সে সময়ে দীর্ঘ প্রবাস জীবনযাপনের পর সুধারামে ফিরে এসেছিলেন খ্যাতনামা ইঞ্জিনিয়ার ওবায়দুল্লাহ। নদীর ভাঙন থেকে নোয়াখালী শহর তথা সুধারামকে রক্ষার জন্য তিনি বিভিন্ন পর্যায়ে দেন দরবার শুরু করেন। কিন্তু ততকালীন সরকার বাঁধ দিয়ে শহর রক্ষা করা সম্ভব নয় বলে অভিমত প্রদান করলে জনাব ওবায়দুল্লাহ নিজ উদ্যোগে ও অর্থব্যয়ে কয়েক হাজার শ্রমিকের সাহায্যে মন্তিয়ারঘোনার মুখে একটা বিরাট বাঁধ নির্মান করেন। জনাব ওবায়দুল্লাহর মৃত্যুর পর নানা কারণে সেই বাঁধের রক্ষণাবেক্ষণের কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। আর তাই অচিরেই জাঁকজমকপূর্ণ বর্ধিষ্ণু এ শহরটি তার সকল এতিহ্য নিয়ে ক্ষুদ্ধ মেঘনার করাল গ্রাসে বিলীন হয়ে গেলো। নদী ভাঙনের পর সোনাপুর থেকে দত্তের হাট পর্যন্ত পুরনো শহর তথা পৌরএলাকার ভগ্নাংশটুকুই অবশিষ্ট রইলো।
কালিতারা বাজারের কাছে মিউনিসিপ্যালিটির যে শেষ লাইটপোস্ট ছিলো, ঠিক ওখানে গিয়েই নদীর ভাঙনটা বন্ধ হয়ে গেলো। বিচ্ছিন্ন উপকূল হিসেবে সোনাপুর রক্ষা পেলো। আর মূল শহরটা শুধু পৌরসভা সীমারেখা বরাবর বিলুপ্ত হয়ে গেলো।
১৯২২ থেকে ১৯৩২ এবং ১৯৪৮ থেকে পর্যায়ক্রমে মোট চারদফা ভাঙনের পর নোয়াখালী শহরটি তার বাগ-বাগিচা এবং দর্শনীয় সৌধমালাসহ চিরকালের মতো হারিয়ে যায় ভূ-পৃষ্ঠ থেকে।
পুরনো শহর নদী গর্ভে বিলুপ্ত হওয়ার পর ১৯৫০ সালে জেলার সদর দপ্তর অস্থায়ীভাবে মাইজদীতে স্থানান্তর করা হয়। পুরনো শহরের নদী ভাঙা মানুষগুলো তাদের বাড়ী-ঘর, দোকান-পাট, ব্যবসা-বাণিজ্য ও সহায় সম্পত্তি সবকিছু হারিয়ে বাঁচার আশায় মাইজদীতে কোন রকম মাথা গোঁজার মত ঠাঁই করে নেয়। ক্রমান্বয়ে এখানে বসতি ও জনপদ গড়ে উঠে। ১৯৫৩ সালে শহরের পুরনো এলাকা কালিতারা, সোনাপুর ও মাইজদীসহ কাদির হানিফ ইউনিয়নের কয়েকটি মৌজা নিয়ে গেজেট বিজ্ঞপ্তিতে নোয়াখালী পৌর এলাকা ঘোষণা করা হয়। কিন্তু সুদীর্ঘ প্রায় একযুগ পর্যন্ত মাইজদীকে নোয়াখালী জেলার সদরদপ্তর হিসেবে সরকারিভাবে স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়টি বিতর্কিত অবস্থায় ছিলো। অবশেষে ১৯৬২ সালে মাইজদীকে নোয়াখালী জেলার স্থায়ী সদর দপ্তর হিসাবে সরকারিভাবে স্বীকৃতি দেয়া হয়।
নদী এখন আর কাছে নেই। চর পড়তে পড়তে দক্ষিণে সরে গেছে চল্লিশ কিলোমিটারের ও বেশি। নদীগর্ভ থেকে জেগে উঠেছে বিশাল চরাঞ্চল। নতুন করে গড়ে উঠেছে জনবসতি। কিন্তু সাথে নিয়ে গেছে আদি নোয়াখালী শহরের সবকিছু। শুধু স্মৃতিটুকুই আছে।
সহায়ক প্রবন্ধসমূহ:
► নোয়াখালী পৌরসভা পরিক্রমা: মোহাম্মদ শামছুল আলম
► নোয়াখালীর ঐতিহাসিক ও ভূতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য: সানাউল্লাহ নূরী
►মেঘনা গর্ভে নোয়াখালীর প্রাচীন শহর: সালাদিন
► স্মারকগ্রন্থ “নোয়াখালী": নোয়াখালী পৌরসভা
► ছবি: উইকিপিডিয়া
এতে সদস্যতা:
পোস্টগুলি (Atom)