rss

জালছেঁড়া নদী

জালছেঁড়া নদী
আমার প্রথম কাব্যগ্রন্থ। প্রকাশকাল: ফেব্রুয়ারি, ২০০৯। প্রকাশক: ভাষাচিত্র, ৩য় তলা, আজিজ সুপার মার্কেট, ঢাকা।

প্রান্তজন

প্রান্তজন
শহীদুল ইসলাম মুকুল

শুক্রবার, ২৯ মে, ২০০৯

চিন্তাটা ব্যক্তিস্বার্থকেন্দ্রিক

চিন্তাটা ব্যক্তিস্বার্থকেন্দ্রিক

আমি যে মানবাধিকারের কথা বলি, সে আমার মহত্ত্ব নয়।
চিন্তাটা খুবই সংকীর্ণ; তুমিই তার সোজাসাপটা লক্ষ্য প্রিয়তমা।
নির্মম পৃথিবীতে তোমার বঞ্চনা আমি সইতে পারবো না।
তাই আমি চাই মানবাধিকার সংবেদনশীল সমাজ।
আমি যে শিশু অধিকারের কথা আওড়াই, তার সাথেও তোমার স্বার্থ জড়িত;
তোমার, মানে আমাদের শিশুকে সুন্দর একটি পৃথিবী উপহার দিতে চাই বলে।
আমি যে সমানাধিকারের কথা বলি, তা কোন লৈঙ্গিক সমতার
চেতনা থেকে নয়-স্রেফ তোমার স্বার্থে।
আমি কি তোমার চেয়ে বেশি পেতে পারি কিছু?
কিভাবে ভালোবাসার সাথে বৈষম্য বসবাস করবে বলো?
আমি তাই সমানাধিকারের কথা বলি, ন্যায্যতার কথা বলি।
আমি যে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার কথা বলি,
সে তোমার জন্য নিরাপদ রাষ্ট্র চাই বলে। আমার প্রিয়তমাকে
নৈরাজ্যের মাঝে রেখে আমি কি নিশ্চিন্তে ঘুমুতে পারি?

এবার বুঝতে পারছো কেন আমি মহ‌ৎ বুলি আওড়াই?
বন্ধুরা যেমনটি ভাবে, আদতে তেমন উদার নই আমি; বলতে পারো চরম ব্যক্তিস্বার্থবাদী।
আমি শুদ্ধ হয়ে ওঠার আপ্রাণ সাধনা করি তোমার কষ্ট চাই না বলে।

সুধীজনের মনে প্রশ্ন উঠতে পারে, তুমি চলে যাওয়ার পরও কেন আমি এসব বলে যাই!
কেন ভালোবাসার দায়মুক্ত হয়েও আমার ভেতরে জন্ম নেয় না ক্রুদ্ধ ফ্যাসিস্ট?
তবে কি এখনো, একটি মুহুর্তও তোমায় ভালো না বেসে থাকি না?


মাইজদী, নোয়াখালী
২৯ আগস্ট, ২০০৮

ফেইসবুকে যোগ করুন

শনিবার, ২ মে, ২০০৯

কাতার ভ্রমণ (শেষ পর্ব)

২০ তারিখ দুপুরেই আমাকে হোটেল ছাড়তে হবে। তাই একরাত অন্য কোথাও থাকতে হবে। মারওয়েব হোটেল থাকার উপায় নাই কারণ খরচ বেশি। তাই ভাবলাম একরাতের জন্য সস্তা কোন হোটেলে উঠবো।

দেশে থাকতেই গুলজার ভাইয়ের সাথে যোগাযোগ হয়েছিলো। গুলজার ভাই আমার এলাকার। ভাইয়ের বন্ধু। সেই সাথে উনার স্ত্রী আমার বন্ধুর ভাগ্নী। আমার খুব স্নেহভাজন। উনাকে ফোন করতেই বললেন, থাকার ব্যবস্থা উনি করবেন। দুপুরের আগেই আমাকে হোটেল থেকে নিয়ে গেলেন। উনার অফিস দেখলাম। তারপর দুপুরের লাঞ্চ করিয়ে উনার কলিগ সাঈদ ভাইয়ের বাসায় রেখে আসলেন। সাঈদ ভাইয়ের সাথে আরেক দেশী মুনির ভাই থাকেন। দুজনেই খুব বন্ধুব‍তসল। বিকেল পর্যন্ত ওখানেই রেস্ট নিলাম। কেনাকাটা করতে হবে মুনির ভাইকে বলতেই বিকেলে উনার গাড়ী নিয়ে বের হলেন। আমরা গেলাম লুলু হাইপার মার্কেটে। বিশাল ওয়ানস্টপ শপিং মল। ইন্ডিয়ান মালিকানাধীন। বেশির ভাগ জিনিসই ইন্ডিয়ান। আমার কিছুই পছন্দ হলো না। কাতার এসে স্থানীয় কিছু না কিনে ইন্ডিয়ান জিনিস কেনার কোনই মানে হয় না। আমি যেরকম শোপিস টাইপ জিনিস চাচ্ছি, তার কিছুই ওখানে নেই। যা আছে, মেড ইন ইন্ডিয়া।

এদিকে মুনির ভাই কাতারে আছেন একবছর প্রায়। কাতারের ঐতিহ্যবাহী জিনিস কোথায় পাওয়া যাবে, সেই ধারণা কম। হাতে সময় থাকলে অবশ্য খুঁজে বের করা যেতো, কিন্তু আমার হাতে সময়ও কম। সন্ধ্যা হয়েছে আগেই। উপায় হলো কলি আপা। দীর্ঘদিন ধরে উনি আর আরিফ ভাই কাতারে আছেন। সবই চেনা। সেই সাথে নারীরাই আসলে সংসার সাজানোর জিনিসপত্র কোথায় পাওয়া যাবে, ভালো জানেন। তাই কলি আপাকে ফোন দিলাম। উনি আর আরিফ ভাই আমার জন্য সময় বের করে রেখেছিলেন। ফোন করতেই মার্কেটের সামনে থেকে আমাকে তুলে নিলেন। গেলাম শাহীন মার্কেটে। সেখানে শোপিস জাতীয় জিনিস পেলাম। কিছু কেনাকাটা করলাম। কিন্তু বেশি কিছু কিনতে পারলাম না। কারণ কেনাকাটার অভ্যাস আমার একেবারেই নেই। কলি আপার পরামর্শ নিয়ে কিছু কিনলাম।

রাত প্রায় দশটা বাজে। কলি আরিফ দম্পতি আমাকে ডিনার করাবেন বলে রেখেছেন। এদিকে গুলজার ভাই ফোন করলেন। তিনিও তার স্ত্রীকে নিয়ে বেরিয়েছেন। আমার সাথে ডিনার করবেন। আমি পড়লাম উভয় সংকটে। শ্যাম রাখি না কূল রাখি অবস্থা। কলি আপা আরিফ ভাই দুইদিন সঙ্গ দিলেন। উনাদের আমন্ত্রণ ফেলতে পারছি না। এদিকে গুলজার ভাই দেশে থাকতেই ঘনিষ্ঠ, তার আমন্ত্রণ ও ফেলতে পারছি না। গুলজার ভাইতো শেষ মেশ অভিমান করলেন ফোনে।

আমি উপায় না দেখে কলি আপাদের কাছ থেকে ক্ষমা চেয়ে নিলাম। একটা রেস্টুরেন্টের দরজা থেকে ফিরে আসলাম। তারপর কলি আপা-আরিফ ভাই আমাকে সমুদ্র পাড়ে নামিয়ে দিলেন। গুলজার ভাই সস্ত্রীক অপেক্ষা করছিলেন ওখানে। সবার সাথে সবার পরিচয় হলো। কিছুক্ষণ আড্ডা দিয়ে কলি আপা-আরিফ ভাই বিদায় নিলেন। গুলজার ভাই, উনার স্ত্রী, আমি একটা রেস্টুরেন্টে ডিনার করলাম। শেষে আমাকে মুনির ভাইয়ের বাসায় নামিয়ে দিলেন।

পরদিন ভোরে নিজেই ট্যাক্সি নিয়ে এয়ারপোর্টে চলে এলাম। সাড়ে ন’টায় ফ্লাইট। আসার সময় বেশ মজা করলাম। যাওয়ার সময় নার্ভাস ছিলাম বলে সুবিধা করতে পারি নাই। এবার বোর্ডিং পাস নেয়ার সময় জানালার পাশে সীট চেয়ে নিলাম। মেঘের উপর দিয়ে যাওয়ার সময় হেভি লাগে।


খাবার দাবারের সময় দেখলাম ট্রেতে স্কচ দেখা যায়। নিলাম তিন আঙ্গুল। কিছুক্ষণ পর পুরুষ যে সার্ভিস দিচ্ছিলো, সে এসে জিজ্ঞেস করলো কিছু লাগবে কিনা। জানা গেলো বিদেশী রুহ আফজা* আছে। ফ্রান্সের ছোট এক বোতল রুহ আফজা শেষ করে আধাঘন্টা ঘুমিয়েও নিলাম। কাতার যাওয়ার কালে প্লেন নামার সময় মাথাব্যথা করেছিলো। আসার সময় কোন অসুবিধাই হলো না। এটা কি বিদেশী রুহ আফজা পানের সুফল কিনা- কে জানে! ;)


ফ্রান্সের রুহ আফজা
ফ্রান্সের রুহ আফজা

ফেইসবুকে যোগ করুন